ভোটকর্মীর গায়ে গরম চা

চোখরাঙানি শুরু হয়েছিল ভোট চলাকালীন। ভোট দিতে আসার সম্ভাবনা নেই, এমন লোকজনের বুথ স্লিপ দেওয়ার জন্য নানা ছুতোয় বুথে ঢুকে হুমকি চলছিল। কর্তাদের জানিয়ে তা বন্ধের ব্যবস্থা করেছিলেন প্রৌঢ়া ভোট-কর্মী। সে জন্য পরে কী অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করে আছে, ভাবতেই পারেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাণ্ডবেশ্বর শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪৫
Share:

পুড়ে গিয়েছে প্রণতি বাগদির পিঠ। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

চোখরাঙানি শুরু হয়েছিল ভোট চলাকালীন। ভোট দিতে আসার সম্ভাবনা নেই, এমন লোকজনের বুথ স্লিপ দেওয়ার জন্য নানা ছুতোয় বুথে ঢুকে হুমকি চলছিল। কর্তাদের জানিয়ে তা বন্ধের ব্যবস্থা করেছিলেন প্রৌঢ়া ভোট-কর্মী। সে জন্য পরে কী অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করে আছে, ভাবতেই পারেননি।

Advertisement

বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরে ভোটপর্ব শেষে আধো-অন্ধকার রাস্তায় হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন বছর বাহান্নর প্রণতি বাগদি। কিছু যুবক কিল-চড় মারে, তার পর গরম চা ঢেলে দেয় তাঁর পিঠে। সে দিনই ন’জনের নামে থানায় অভিযোগ করেছিলেন তিনি। অভিযুক্তেরা এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা পরেও কেউ ধরা পড়েনি।

পাণ্ডবেশ্বরের সিপিএম প্রার্থী গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বিরোধীরা তো চার দিকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। ভোটকর্মীর উপরেও এই রকম অত্যাচার হল। নির্বাচন কমিশন তবু হাত গুটিয়ে বসে!’’ কেন কেউ ধরা পড়েনি, সে প্রশ্নে মুখে কুলুপ পুলিশকর্তাদের। বর্ধমানের রির্টানিং অফিসার তথা জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন শুধু বলেন, ‘‘তদন্ত কী পর্যায়ে রয়েছে, বিশদে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

Advertisement

পাণ্ডবেশ্বরের বৈদ্যনাথপুরে গিরিডাঙার বাসিন্দা প্রণতিদেবী গ্রামের শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকা। সোমবারের ভোটে বুথ লেভেল অফিসারের (বিএলও) দায়িত্ব পেয়ে গিয়েছিলেন বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের বুথে। প্রণতিদেবীর অভিযোগ, সকাল থেকেই এলাকার শাসক দলের কিছু কর্মী উত্ত্যক্ত করছিল। মৃত্যুর পরেও নাম রয়েছে, বিয়ে হয়ে চলে গিয়েছেন বা ভুলবশত তালিকায় দু’বার নাম রয়ে গিয়েছে— এমন নানা জনের বুথ স্লিপ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছিল তারা। প্রণতিদেবীর কথায়, ‘‘ওই স্লিপ দেখিয়ে হয়তো ভুয়ো ভোট দেওয়ার ছক ছিল ওদের। রাজি না হওয়ায় বুথ চত্বরে গালিগালাজ করছিল। পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনী ওদের তাড়িয়ে দেয়।’’ প্রণতিদেবী জানান, সন্ধে সাড়ে ৬টায় বুথ থেকে বেরোতেই ঘিরে ধরে জনা দশেক তৃণমূল নেতা-কর্মী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওদের বক্তব্য, আমি বুথে সিপিএমের হয়ে কাজ করেছি। প্রতিবাদ করায় মারতে শুরু করে। পিছন থেকে এক জন গায়ে গরম চা ঢেলে দেয়।’’ তাঁর স্বামী লখিন্দর বাগদি বলেন, ‘‘কেউ ধরা না পড়ায় ভয়ে আছি।’’

ঘটনার নিন্দা করলেও এর সঙ্গে তাঁদের দলের কারও জড়িত থাকার কথা মানতে চাননি পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল প্রার্থী জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি বলেন, ‘‘দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের আর্জি জানিয়েছি প্রশাসনের কাছে।’’ আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পূর্ব) কুমার গৌতমকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। জবাব দেননি এসএমএসের-ও।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement