ভোট না দিতে যাওয়ার জন্য দুষ্কৃতীদের হুমকির অভিযোগ তুলে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার চুনাখালি পঞ্চায়েত এবং ঝড়খালি ও জীবনতলা থানা এলাকার বেশ কিছু ভোটার। আজ, শনিবার ওই সব জায়গায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
শুক্রবার প্রধান বিচারপতি জানান, গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন ভোটদাতারা। সেই আশঙ্কা দূর করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী আদালতে জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আরও সক্রিয় করা হয়েছে। প্রয়োজনে তিনি সেক্টর অফিসারের মোবাইল নম্বর ভোটদাতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। যাতে গোলমালের সামান্য আঁচ পেলেই ভোটদাতারা সেক্টর অফিসারকে ফোন করতে পারেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ওই অফিসার দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
চুনাখালি পঞ্চায়েত এলাকা গোসাবা বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন। সেখানকার বেশ কিছু বাসিন্দার অভিযোগ, মাস তিনেক ধরে দুষ্কৃতীরা তাঁদের ভোট দিতে না যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। দুষ্কৃতীদের কাছে ভোটার-কার্ড জমা না রাখলে তাঁদের মারধর করে ঘরছাড়া করার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা অবাধ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার ওই মামলার শুনানিতে কমিশনের আইনজীবী দীপায়ন চৌধুরী আদালতে একটি রিপোর্ট পেশ করে জানান, চুনাখালিতে যাতে ভোটদাতারা অবাধে ভোট দিতে পারেন, তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী একাধিকবার এলাকার সব জায়গায় টহল দিয়েছে। আজ, শনিবার চুনাখালিতে একজন পুলিশ পর্যবেক্ষকও নিযুক্ত করা হয়েছে।
এ দিন ওই এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে টহল দিতে দেখা গিয়েছে। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এলাকায় এক সঙ্গে চার জনের বেশি কাউকে যেতে দেয়নি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। চায়ের দোকানগুলিতে জটলা হলেও পুলিশকে সরিয়ে দিতে দেখা গিয়েছে। তবু ভয় পুরোপুরি যায়নি ভোটারদের। ভোটার-স্লিপ বিলির নাম করে শাসক দলের লোকজন ভোটারদের কাছে গিয়ে ভয় দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ তোলে বিরোধীরা। শাসক দল অভিযোগ মানেনি।
এ দিন ঝড়খালি ও জীবনতলার ভোটদাতাদের জনস্বার্থে দায়ের করা মামলারও শুনানি হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি তপন মুখোপাধ্যায়ন আদালতে বাসন্তী থানার পুলিশের দায়ের করা একটি রিপোর্ট পেশ করেন। তিনি জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে নির্বিঘ্নে ভোট করানোর সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তা শুনে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ কমিশন ও রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়, ভোটের সময় যাতে কোনও ভাবেই অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে।