এর আগে নানান সময়ে নানান জনকে আঙুল তুলে হুমকি দিয়েছেন। এমনকী সাধারণ ভোটারদেরও। পরিস্থিতির কঠিন পাকে জড়িয়ে এ বার নিজের সরকারের পুলিশকেও কার্যত দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে বসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কী ‘অপরাধ’ পুলিশের? নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ এবং ব্যবস্থা মতো অবাধ ভোট করানোর উদ্যোগে সামিল হওয়াই রাজ্য পুলিশের একাংশের ‘গুরুতর অপরাধ’ হয়ে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে শেষ দফার নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে বক্তৃতা করলেন, তার ছত্রে ছত্রে এই সব পুলিশ কর্তা বা কর্মীদের প্রতি ঝড়ে পড়ল ক্রোধ।
মমতার দাবি- কংগ্রেস, সিপিএম আর বিজেপিকে সুবিধে করে দিতে এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আসা হয়েছে। আর তার সঙ্গে নাকি কাজে লাগানো হচ্ছে রাজ্যের ‘‘কিছু ভিতু পুলিশকে’’। সেই একাংশকে উদ্দেশ্য করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হুমকি, ‘‘ইলেকশন কমিশন দেখাচ্ছে আমায়! পুলিশ নিয়ে গিয়ে রাতের অন্ধকারে তাণ্ডব চালানো হচ্ছে। কারা কারা প্ল্যানিংয়ে ছিল সব জানি। প্রত্যেকটা রেকর্ড আছে। যাঁরা এসব করছেন তাঁদের ভুগতে হবে’’।
মমতার নিজের নির্বাচনী এলাকাতেও ভোটের আগের দিন কিছু ক্লাবে তল্লাশি চালায় পুলিশ। দক্ষিণ কলকাতার দুটি ক্লাবে বোমাও উদ্ধার হয়। বেশ কিছু ক্লাবে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়েও ক্ষিপ্ত মমতার আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে পুলিশকে। হুমকির সুর ধরে রেখেই তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পাড়ার ক্লাবে ভোটের আগের দিন পুলিশ এসে তালা দিয়ে গেল। ভোট মিটলে সব জবাব দেব’’।
এ রাজ্যে অবাধ আর সুষ্ঠু ভোট করতে এ বার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সামিল হয়েছে রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশও। তৃণমূল নেতৃত্ব এটা ভাল ভাবে নেয়নি তা গত কয়েক দিনেই পরিষ্কার। নির্বাচন কমিশন কিংবা কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ‘জরুরি অবস্থা’ চালানোর অভিযোগ এনেছেন কোনও কোনও তৃণমূল নেতা। কিন্তু সব সীমারেখা টপকে মুখ্যমন্ত্রী আজ যে ভাবে ক্ষিপ্ত স্বরে হুমকি দিয়ে বসলেন নিজের পুলিশকে, তা ক্ষোভের সঞ্চার করেছে পুলিশ মহলেও।
সমালোচনা উঠেছে রাজনৈতিক স্তরেও। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি নিজের পছন্দ মতো ভোট করাতে পারেননি। ভোট লুঠ করতে পারেননি। তাই এ সব করছেন’’। সিপিএম নেতা এবং প্রার্থী শমীক লাহিড়ির দাবি, স্বতঃপ্রণোদিত ব্যবস্থা নিক কমিশন।