মুখ্যমন্ত্রীর বিষোদ্গারের তোয়াক্কাই করল না নির্বাচন কমিশন।
ভোটের আগের দিন থেকে জেলা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা নিয়ে বৃহস্পতিবার কমিশনকে কার্যত হুমকি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাকে পাত্তা না দিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কমিশন জানিয়ে দিল, কঠোর ভাবে ১৪৪ ধারা প্রয়োগের সিদ্ধান্ত থেকে তারা বিন্দুমাত্র পিছু হটছে না। রাজ্যে শেষ দু’দফার ভোটে সব রকমের ‘দাদাগিরি’ রুখতে তারা যে বদ্ধপরিকর, তা জানিয়ে এ দিন ফের সাত দফা নির্দেশিকাও জারি করেছে কমিশন।
এ দিন যাদবপুরের সুকান্ত সেতু থেকে তৃণমূলের মিছিলের নেতৃত্ব দেন মমতা। মিছিল শুরুর আগে বক্তৃতায় তিনি নির্বাচন কমিশন এবং বিরোধীদের দিকে তোপ দেগে বলেন, ‘‘আগের দিন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। ভোটের দিন নাকি লোক বেরোবে না। এটা হয় নাকি! জিততে পারবে না বলে বলছে কার্ফু করে দাও। মানুষ ভোট দেবে না? তুমি চাও যাতে মানুষ বেরোতে না পারে। রিগিং করে সব শেষ করে দিয়েছে। এখন দিল্লিকে শেখাচ্ছে ১৪৪ ধারা করে দাও, কার্ফু করে দাও।’’
বস্তুত ১৪৪ ধারার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে আগেই কমিশনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল তৃণমূল। দলের সহ সভাপতি মুকুল রায় কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, উপদ্রুত এলাকা না-হলে গোটা জেলায় কার্ফু জারি করা হচ্ছে কোন যুক্তিতে? ১৪৪ ধারা তো বুথের ৬০০ মিটারের মধ্যে জারি করার কথা। কমিশনের তরফে এ দিন রাত পর্যন্ত শাসক দলকে কোনও জবাব দেওয়া না-হলেও নির্বাচন সদনের জনসংযোগ অধিকর্তা ধীরেন্দ্র ওঝা প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ১৪৪ ধারা কঠোর ভাবে প্রয়োগ করা হবে। ভোট না-মেটা পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। ৩০ এপ্রিল এবং ৫ মে বাকি দু’দফার ভোট শান্তিপূর্ণ করতে এ দিনই কমিশনের তরফে সাত দফা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এখনও ৭৮টি আসনে ভোটগ্রহণ বাকি। সমাজের দুর্বলতম মানুষটিও যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের আইনশৃঙ্খলার উপর কঠোর নজরদারি চালাতে হবে। যে সব দুষ্কৃতী ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছে, হুমকি দিচ্ছে বা মারধর করছে, তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত যে কোনও ঘটনা মোকাবিলার দায়িত্ব যে মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি’কেই নিতে হবে তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছে কমিশন।