হিড়বাঁধের সভায় উপচে পড়ল ভিড়

গত বিধানসভা নির্বাচনে পরিবর্তনের ঝড়েও বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে অটুট ছিল লালদুর্গ। পরবর্তী পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জয়জয়কার হলেও হিড়বাঁধ ব্লকে এখনও সিপিএমের প্রভাব রয়ে গিয়েছে।

Advertisement

দেবব্রত দাস

হিড়বাঁধ শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৬ ০১:৩৬
Share:

তবে হিড়বাঁধে মমতার সভায় ভিড় উপচে পড়ে।ছবি : উমাকান্ত ধর

গত বিধানসভা নির্বাচনে পরিবর্তনের ঝড়েও বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে অটুট ছিল লালদুর্গ। পরবর্তী পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জয়জয়কার হলেও হিড়বাঁধ ব্লকে এখনও সিপিএমের প্রভাব রয়ে গিয়েছে। গোটা বাঁকুড়া জেলার মধ্যে একমাত্র এই পঞ্চায়েত সমিতিতেই ক্ষমতা দখল করেছিল সিপিএম। এই অবস্থায় বামদুর্গ ভাঙতে মরিয়া তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার হিড়বাঁধ থেকেই বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে প্রচার শুরু করে দিলেন। এ দিন রানিবাঁধ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত হিড়বাঁধের ভুয়াকানা গ্রাম লাগোয়া বাগমারির মাঠে সভা করেন। আজ, বুধবার তিনি সভা করবেন রাইপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ফুলকুসমা এবং তালড্যাংরায়।

Advertisement

জেলার ১২টি আসনের মধ্যে জঙ্গলমহলের তিন কেন্দ্র রানিবাঁধ, রাইপুর ও তালড্যাংরা গত বিধানসভা ভোটেও সিপিএম প্রার্থীদের জিতিয়েছে। রাজ্যের প্রথম দফার ভোট এ বার জঙ্গলমহলে। লোকসভা ভোটের নিরিখে রানিবাঁধ ও রাইপুর কেন্দ্রে এগিয়ে তৃণমূল। শুধু তালড্যাংরায় জোট সামান্য এগিয়ে। এই অবস্থায় এই তিনটি আসন বিরোধীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল। সেই লক্ষ্যে বাঁকুড়ার পর্যবেক্ষক হওয়ার পর থেকে লাগাতার সভা করেছেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হিড়বাঁধ ব্লকে এখনও সিপিএমের দাপট রয়েছে। লোকসভা ভোটের নিরিখেও এই ব্লকে এগিয়ে ছিল সিপিএম। স্বাভাবিক কারণেই হিড়বাঁধ ব্লকে সিপিএমকে দুরমুশ করতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল। খোদ দলনেত্রী সভা করায় হিড়বাঁধে নিজেদের দাপট বাড়ানোর ব্যাপারে আশাবাদী তৃণমূল নেতৃত্ব।

এ দিন স্বভাবসিদ্ধ ঢংয়ে বিরোধীদের উদ্দেশে সুর চড়ানোর পাশপাশি মমতা দিয়েছেন তাঁর সাড়ে চার বছরের সরকারের সাফল্যের খতিয়ান। জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরানোর কারিগর যে তিনিই সেকথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, “কী ছিল খাতড়া, রাইপুর, রানিবাঁধ, সারেঙ্গা! চমকাইতলা থেকে সারেঙ্গা পর্যন্ত সন্ধের পর মানুষ বাড়ি থেকে বের হতে পারত না। রক্ত ঝরত প্রতিদিন। এখন শান্তি এসেছে।’’ তাঁর কপ্টারে চড়ে প্রচারকে হাতিয়ার করেছে বিরোধীরা। এ প্রসঙ্গে মমতার সাফাই, “কেউ কেউ বলে বেড়াচ্ছে আমরা আকাশযানে আসছি। কেন আসছি জানেন, অনেক দূরে দূরে সভা, তাই।’’

Advertisement

এ দিন সভায় উপচে পড়েছিল ভিড়। হিড়বাঁধের মাটিতে এই প্রথম সভা করলেন মমতা। স্বাভাবিকভাবেই এই সভাকে সফল করতে দ্বন্দ্ব ভুলে তৃণমূলের জেলা নেতা অরূপ চক্রবর্তী, জয়ন্ত মিত্র থেকে শ্যামল সরকার সকলেই কোমর বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। সভার ভিড় অবশ্য নেত্রীর পাশাপাশি জেলা ও ব্লকস্তরের নেতাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, “সভায় ৪০ হাজারের বেশি মানুষ হাজির ছিলেন। জঙ্গলমহলের তিনটি আসনেই যে আমরা জিতব তা এই ভিড়ই প্রমাণ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement