মালদহ মেডিক্যালে আহত সিপিএম কর্মী স্বাধীন ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
ভোটপর্ব মিটে গেলেও রাজনৈতিক হিংসা অব্যাহত মালদহে। সিপিএমের হয়ে কাজ করায় দুই কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ইংরেজবাজারের সাদুল্লাপুর গ্রামে। ঘটনায় আহত দুই সিপিএম কর্মীর মধ্যে একজনের আঘাত গুরুতর থাকায় তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সোমবার সকালে ঘটনার পরিপেক্ষিতে ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও একজনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, আহতেরা হলেন স্বাধীন ঘোষ ও গৌড় ঘোষ। তাঁরা ইংরেজবাজারের যদুপুরের কমলাবাড়ির বাসিন্দা। স্বাধীন বাবুর ডান কানে হাঁসুয়ার আঘাত থাকায় তিনি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর গৌড়কে প্রাথমিক চিকিৎসা করেই ছেড়ে দেওয়া হয়। মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের করার চেষ্টা চলছে।’’
এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘জেলা জুড়েই আমাদের দলীয় কর্মীদের উপরে হামলা চালানো হচ্ছে। আমরা প্রতিটি ঘটনাতেই থানাতে অভিযোগ জানিয়েছি। তবে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না। তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে বুঝে হামলার রাজনীতি করছে।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ইংরেজবাজারের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘‘সিপিএমের লোকেরাই আমাদের নেতা-কর্মীদের উপরে হামলা চালাচ্ছে। আর উল্টে আমাদের নামেই দায় চাপানো হচ্ছে। আর পারিবারিক বিবাদকে রাজনৈতিক রং লাগিয়ে ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে সিপিএম।’’
ভোট মিটে যাওয়ার পরেও মালদহে একাধিকবার রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটছে। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নাম জড়িয়েছে শাসক দলের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে। গত শনিবার তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে জেলা পুলিশ সুপারের দারস্থ হয়েছিল বাম-কংগ্রেস জোট নেতৃত্ব। এই ঘটনাটি গুলির রেশ কাটতে না কাটতেই ফের রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটল মালদহে। এ বারের ঘটনাটি ইংরেজবাজারের সাদুল্লাপুরে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাত নটা নাগাদ সাদুল্লাপুর এলাকার একটি পানের দোকানের সামনে বসেছিলেন দুই সিপিএম কর্মী স্বাধীন ঘোষ ও গৌড় ঘোষ। সেই সময় তৃণমূলের প্রদীপ মন্ডল ও অশোক রায়ের নেতৃত্বে সাত জনের একটি দল হামলা চালায়। স্বাধীনবাবু বলেন, ‘‘আমরা বাম কংগ্রেস জোট প্রার্থী নীহার রঞ্জন ঘোষের হয়ে কাজ করেছি ভোটে। এর আগেও একাধিকবার আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এদিন পরিকল্পিত ভাবে আমার উপরে হামলা চালানো হয়।’’ ঘটনার পর থেকে প্রদীপ ও অশোক রায়েরা ফেরার রয়েছে। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।