শেষ দফায় ৫ মে কোচবিহারে ভোট। তার আগে পুলিসের বিরুদ্ধে শাসক দলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ পেয়ে ফের সক্রিয় হল কমিশন। বদলি করা হল তুফানগঞ্জের এসডিপিও মহম্মদ ফারুক চৌধুরী এবং সিতাই থানার আইসি কার্তিক ভট্টাচার্যকে।
বিরোধীদের কাছ থেকে একই অভিযোগ পেয়ে দিন সাতেক আগে দিনহাটা থানার আইসি তীর্থসারথি নাথ এবং তুফানগঞ্জ থানার ওসি দেবব্রত ঝাকে বদলি করেছিল নির্বাচন কমিশন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই দুই থানার দেওয়া হয়েছিল অন্য অফিসারদের হাতে। এ বারও জোটের প্রার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তৎপর হয়েছে কমিশন। তবে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তুফানগঞ্জের এসডিপিও এবং সিতাই থানার আইসির বদলির নির্দেশ তিনি পাননি বলে জানিয়েছেন কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব। তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ওই নির্দেশের কথা শুনেছি। সরকারি ভাবে কাগজপত্র হাতে আসা বাকি আছে।”
ওই দুই অফিসার থাকলে ভোটের দিন শাসক দলের হয়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করতেন এমনটাই আশঙ্কা জোটের। নাটাবাড়ি কেন্দ্রের জোট প্রার্থী তমসের আলি অভিযোগ করেন, চিলাখানায় সিপিএম কর্মীদের বাড়িতে হামলা করে শাসক দল। হুমকি দেওয়া হয়। কিন্তু ঘটনার তদন্ত এসে বাম কর্মী সমর্থকদের অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন তুফানগঞ্জের এসডিপিও। তিনি প্রতিবাদ করলে তাঁর বিরুদ্ধেও মিথ্যা অভিযোগ আনার হুমকি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “এসডিপিও আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে নানা প্রশ্ন করেন। সব ক’টির উত্তর দিই। এই যদি অবস্থা হয়। তাহলে কী ভাবে আমাদের কর্মী সমর্থকরা সাহস পাবেন। কমিশনকে সব জানিয়েছিলাম। ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই আশায় ছিলাম।”
অনেকটা একই অভিযোগ ছিল সিতাই থানার আইসি কার্তিকবাবুর বিরুদ্ধেও। দিন কয়েক আগে তাঁর বিরুদ্ধে কমিশনের কাছে অভিযোগ জানান বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থী কেশব রায়। সিতাইয়ে প্রচারে গিয়ে তিনি শাসক দলের কর্মীদের বাধার মুখে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তাঁকে লক্ষ করে কটূক্তি করা হয়। তাঁর অভিযোগ, সিতাই থানায় শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গেলে নিতে চায়নি থানা। ওই অবস্থায় থানার মধ্যেই কর্মীদের নিয়ে অবস্থানে বসে পড়েছিলেন কেশববাবু। পরে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা সেখানে যান। কেশববাবুর অভিযোগও নেওয়া হয়। এ দিন কেশববাবু বলেন, “কিছু ক্ষণ আগেই আইসি বদলির খবর পেলাম। ওই দিন অভিযোগ নিতে গড়িমসি করায় অভিযোগ জানিয়েছিলাম।”
কমিশনের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ শাসক দলের নেতারা। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কমিশন এক তরফা নানা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। রাজ্যের অফিসাররা নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছেন। ভোটের সময় তাঁদের এমন ভাবে বদলি করা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা কমিশন বলতে পারবে।” তুফানগঞ্জের এসডিপিও বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। সিতাইয়ের আইসিও ফোন ধরেননি।