কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে রাজীব কুমারকে রাখা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে উড়ালপুল দুর্ঘটনা নিয়ে আজ দুপুর থেকেই অন্য রকম পরিস্থিতির জেরে কমিশনের সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারকে জানানো হয়নি। সম্ভবত আগামিকাল এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে কমিশন।
বিজেপি, কংগ্রেস ও বামেরা একযোগে রাজীব কুমারের অপসারণ দাবি করায় কমিশনের উপর চাপ বাড়ছিল। এ নিয়ে রাজ্য সরকারের থেকে রিপোর্ট চেয়েছিল তারা। সূত্রের খবর, বিজেপির দফতরে পুলিশের
ঘুষ দিতে যাওয়ার অভিযোগ
নিয়ে রাজ্যের প্রাথমিক রিপোর্টে কমিশন সন্তুষ্ট হয়নি। কারণ, এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া রিপোর্টই কমিশনে পাঠিয়ে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। ফলে নতুন করে রিপোর্ট চাওয়া হয় রাজ্যের কাছে। সেটি নিয়ে আজ কমিশনের ফুল বেঞ্চে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, রাজীব কুমার ও অন্য যে সব আমলার বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ এসেছে, তাঁদের বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত হয়েছে। কলকাতায় দুর্ঘটনার জেরে সে কথা রাজ্যকে জানানো হয়নি।
রাজীব কুমারকে পদে বহাল রাখতে আজও চেষ্টা চালিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব ও রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। উড়ালপুল দুর্ঘটনার পরে এখনই রাজীব কুমারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত না নিতে কমিশনকে অনুরোধ করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। তাঁর যুক্তি, দুর্ঘটনা-পরবর্তী পরিস্থিতি সামলাতে রাজীব কুমারের ওই
পদে বহাল থাকা প্রয়োজন। সূত্রের খবর, দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরে রাজীব কুমারকে নিয়ে তদ্বির করেছেন মুকুল রায়। গত কাল এবং পরশু বিজেপি ও কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা এসে দেখা করেছেন কমিশনের সঙ্গে। তাঁদের অভিযোগ ছিল, কলকাতার পুলিশ কমিশনার-সহ কয়েক জন জেলাশাসক ও পুলিশকর্তা তৃণমূলের নির্দেশে কাজ করছেন। তাঁদের অপসারণের দাবি তোলা হয়। তারই পাল্টা হিসেবে তৃণমূল আজ মুকুলকে দৌত্যে নামিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মুকুল অবশ্য পরে বলেন, ‘‘কাকে সরানো হবে বা হবে না, ভোটের আগে সেটা স্থির করা নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। কিন্তু ভোট তো আর কমিশন দেবে না, ভোট দেবে মানুষ।’’
নারদ কাণ্ড নিয়ে বিরোধী দলগুলির প্রচার ঠেকাতেও আজ কমিশনে পাল্টা সওয়াল করেছেন মুকুল। সূত্রের খবর, কমিশনকে মুকুল জানান নারদের ভিডিও এখনও যাচাই করা হয়নি। কিন্তু সেই ভিডিও নির্বাচনী প্রচারে এনে আচরণবিধি ভঙ্গ করছেন বিরোধীরা। তাই কমিশনের উচিত এই প্রচার বন্ধ করে দেওয়া। মুকুলের বক্তব্য, ‘‘যাচাই করা হয়নি, এমন সব নথি নিয়ে দেওয়াল লেখা হচ্ছে। পোস্টার ফেলা হচ্ছে। সাংবাদিক বৈঠক করছে সিপিএম, কংগ্রেস।’’ তাঁর দাবি, বিরোধীদের ‘ষড়যন্ত্র’কে উপেক্ষা করে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফের ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল।