প্রতীকী ছবি। ফাইল চিত্র
এক দিকে জিএনএলএফের অন্দরে প্রার্থীদের নিয়ে টানাপড়েন অব্যাহত। আরেক দিকে সঙ্গী সিপিআরএম একটি আসন দাবি করায় দার্জিলিং পাহাড়ে বিজেপির জোটে জট চলছেই। প্রার্থী ঠিক না হওয়ায় গত বুধবার দলের প্রার্থী তালিকায় নাম ছিল না পাহাড়ের তিনটি আসনের। কোনও কিছু আলাদা করে বলাও হয়নি পাহাড়ের আসনগুলির কথা। জিএনএলএফের একটি সূত্রের দাবি, মন ঘিসিং ও অমিত শাহের আলোচনার পরেই সব চূড়ান্ত হবে। আবার বিজেপির প্রতীক, নাকি জিএনএলএফের প্রতীক, তা নিয়েও রয়েছে মতানৈক্য। পাহাড়ের বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে একদল বিজেপি প্রতীকে লড়তে অনিচ্ছাও প্রকাশ করেছেন। এই অবস্থায় সব মিলিয়ে পাহাড়ে জট যে কবে খুলবে, তা আপাতত পরিষ্কার নয়।
দার্জিলিঙের সদস্য প্রাক্তন বিজেপির বিধায়ক নীরজ জিম্বার দাবি, ‘‘অমিত শাহের সঙ্গে মন ঘিসিংয়ের কথা হলেই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’’ দলের দার্জিলিঙের সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড বলছেন, ‘‘মন ঘিসিং-র চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেব। আমরা অপেক্ষা করছি।’’ দার্জিলিং আসন নিয়ে এই দুইয়ের টানাপড়েনের পাশাপাশি কার্শিয়াং আসনে মহেন্দ্র ছেত্রীকে প্রার্থী করা নিয়ে আলোচনা চলছে বলে দলীয় সূত্রের খবর।
আগামী ২১ মার্চ বিনয় তামাংপন্থী মোর্চার তরফে মংপু থেকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে। ২৩ মার্চ বিমল গুরুংপন্থীরা মোর্চার প্রার্থী ঘোষণা করবেন। এর আগে জিএনএলএফের একাংশ চেয়েছিল, বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করে প্রার্থী ঘোষণা করতে। কিন্তু দলের অন্দরে প্রার্থীপদ নিয়ে টানাটানি আর জোটের আরেক শরিক সিপিআরএমের মতো দলের আসনের দাবি সমস্যা বাড়িয়েছে। সিপিআরএমের গোবিন্দ ছেত্রীদের দাবি, বড় শরিক জিএনএলএফ ২টি আসনে লড়ুক। দার্জিলিং, না হলে কার্শিয়াং আসনটি তাঁদের দেওয়া হোক। দলের নেতা রত্ন বাহাদুর রাই একসময় দার্জিলিঙের বাম সাংসদ ছিলেন। বিজনবাড়ি, ঘুম, সোনাদা, সুখিয়াপোখরির মতো এলাকার চা বাগানে বামেদের এখনও কিছু শক্তি রয়েছে। একে ভরসা করেই কার্শিয়াঙে সিপিআরএমের মতো দল ভোটে লড়তে চেয়েছে। যদিও বিজেপি নেতৃত্ব তাতে খুব একটা আগ্রহী নন।
দলীয় সূত্রের খবর, প্রার্থী ছাড়াও প্রতীক নিয়ে এখনও কাটেনি জট। বিমল গুরুং সঙ্গ ছেড়ে চলে আসার পর জিএনএলএফের হাত শক্ত করে ধরেছে বিজেপি। কিন্তু পাহাড় থেকে ক্রমাগত লোকসভা ভোটে জিতলেও এখনও পাহাড় সমস্যা, ১১ জনজাতির স্বীকৃতির মতো বিষয়গুলি নিয়ে বিজেপি কিছুই করেনি। এটাই গুরুং বা বিনয় তামাংরা জোরদারভাবে প্রচারে রেখেছেন। তাতে সরাসরি বিজেপির প্রতীকে ভোটে লড়লে কী ফল হবে, তা নিয়ে জিএনএলএফ নেতাদের একাংশ সন্দিহান। আবার উল্টো মতও রয়েছে। সুবজ পতাকার দলের একাংশ মনে করছেন, নীরজ জিম্বা পদ্মফুল প্রতীকে জিতেছেন। তিনবার পদ্মফুলের সাংসদ পাহাড়ে হয়েছে। তাতে পদ্মফুল প্রতীক পাহাড়বাসীর কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ভোটের রাজনীতির বাইরে থেকে নতুন প্রতীক সেখানে দিলে, কী প্রভাব পড়বে তাও আলোচনা করে দেখখেন নেতারা। তাঁরা বলছেন, ‘‘সব কিছু বিশ্লেষণ করে দ্রুতই সব চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’’