প্রতিদ্বন্দ্বী: সোনারপুরের বুথে বুথে ঘুরছেন তৃণমূলের অরুন্ধতী মৈত্র (বাঁ-দিকে) এবং বিজেপি-র অঞ্জনা বসু। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
সকাল সাড়ে ছ’টা থেকেই সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় দৌড়ে বেড়ালেন দু’দলের দুই অভিনেত্রী প্রার্থী। তৃণমূলের অরুন্ধতী (লাভলি) মৈত্র ও বিজেপির অঞ্জনা বসু। আবার সোনারপুর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের লড়াইয়ে শনিবার এক ইঞ্চি জমিও ছাড়লেন না শাসক দলের বিদায়ী বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম এবং এক সময়ে তাঁর ঘনিষ্ঠ সৈনিক রঞ্জন বৈদ্য, বর্তমানে যিনি বিজেপি প্রার্থী।
সোনারপুর দক্ষিণ কেন্দ্রের প্রতাপনগর, কালিকাপুর-সহ বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে এ দিন দাঁড়িয়েছে অঞ্জনার কনভয়। গাড়ি থেকে নেমে বুথের কাছে গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। তাঁর কনভয় বুথ ছাড়ার খানিক পরেই সেখানে হাজির হয়েছেন অরুন্ধতী। সোনারপুর দক্ষিণ কেন্দ্রের ভোটারেরা দিনভর দুই অভিনেত্রীর এমনই দৌড়োদৌড়ির সাক্ষী থাকলেন। কালিকাপুর এলাকার এক ভোটারের কথায়, ‘‘সকাল থেকে দু’জনের ‘এনার্জি’র লড়াই দেখল সোনারপুর।’’ তবে অঞ্জনা ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন অরুন্ধতী। তিনি বলেন, ‘‘দুপুরে রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকার নবতারা স্কুলের বুথে আমাকে নানা ভাবে হেনস্থা করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিজেপি সমর্থকেরা ভোটারদের শাসানি দিচ্ছিল। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে বুথ থেকে বার করে দেওয়া হয়। এমনকি, বুথ থেকে বেশ কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে এক জায়গায় কফি খাচ্ছিলাম। তখনও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা এসে আমাকে সরিয়ে দেয়।’’ তবে বিরোধী প্রার্থীর এই অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন অঞ্জনা। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা প্রতিটি বুথে আমার পরিচয়পত্রও পরীক্ষা করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে বুথে আটকে দিয়েছেন। সেই অধিকার তাঁদের রয়েছে। আমি কোনও প্রতিবাদ করিনি।’’
এ দিন সকাল থেকেই দুই দলের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সোনারপুর উত্তর কেন্দ্রের খেয়াদহ (১) ও (২) পঞ্চায়েত এলাকা। সেখানকার রানাভুতিয়া এলাকায় এক তৃণমূল কর্মী ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলে তাঁকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে তুলে দেন বিজেপি প্রার্থী রঞ্জন বৈদ্য। খেয়াদহ-২ অঞ্চলের একটি বুথে গিয়ে মহিলাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর সরকার। বিজেপির অভিযোগ, ভোটারদের লাইনে কয়েক জন গেরুয়া পাঞ্জাবি পরে দাঁড়িয়েছিলেন। প্রবীরবাবু তাঁদের নানা ভাবে শাসানি দিচ্ছিলেন। এর পরেই মহিলারা প্রবীরবাবুর দিকে তেড়ে যান। ওই সময়ে তৃণমূল প্রার্থী ফিরদৌসি বেগম দু’পক্ষকে সরিয়ে দেন। পরে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দিন সকাল থেকেই সোনারপুর উত্তর কেন্দ্রের খেয়াদা (১) ও (২) পঞ্চায়েত এলাকায় বিজেপি প্রার্থী রঞ্জন এবং তৃণমূল প্রার্থী ফিরদৌসি ছুটে বেড়িয়েছেন। ওই এলাকার চামুড়ায় সকালে ভোট দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি সমর্থকেরা। পরে নরেন্দ্রপুর থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তী অবস্থানকারীদের বুথে নিয়ে গিয়ে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। দিনের শেষে দুই কেন্দ্রের চার প্রার্থীই অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁরাই জিতবেন।