প্রতীকী চিত্র।
অতিমারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দাপটে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে একে একে সমস্ত রাজনৈতিক দল নিজেদের বৃহৎ জনসমাবেশ থেকে শুরু করে রোড শো বাতিল করছে। প্রচারের কর্মসূচি কাটছাঁট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভাতেও বদল আনা হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে পথিকৃৎ অবশ্য আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তারাই প্রথম প্রকাশ্যে বড় সভা এবং মিছিল না-করার কথা ঘোষণা করেছিল। বিকল্প পথে সিপিএমের ভোট প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে নেটমাধ্যমে। নতুন প্রচার কৌশলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিকল্প মাধ্যমে বিকল্পের কথা’। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হচ্ছে এই নতুন প্রচার কর্মসূচি। ঠিক হয়েছে, মঙ্গলবার থেকে প্রতিদিন রাত ৮টায় সিপিএমের একজন রাজ্যনেতা ফেসবুক লাইভে আসবেন। ওই এক ঘণ্টায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ‘ব্যর্থতার’ সঙ্গে সংযুক্ত মোর্চার বিকল্প সরকার গঠিত হলে মানুষ কী ভাবে উপকৃত হবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত বলবেন বক্তারা।
ফেসবুকের পাশাপাশি অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হবে রাজ্য সিপিএমের ইউটিউব চ্যানেলেও। বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে মোবাইল ফোনের মারফত পৌঁছে যাওয়াই সিপিএমের এই কর্মসূচির লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন রাজ্য কমিটির এক নেতা। এক্ষেত্রে দলের সর্বস্তরের নেতৃত্বকে নেটমাধ্যমে হাজির করানো হবে বলেও ওই নেতা জানিয়েছেন। এই প্রচার কর্মসূচিতে যেমন অংশ নেবেন দলের শীর্ষনেতারা, তেমনই হাজির করানো হবে ছাত্র-যুব, সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতানেত্রীদেরও।
ওই প্রচারের জন্য প্রাথমিক ভাবে পাঁচদিনের সূচি তৈরি করেছে সিপিএমের ডিজিটাল শাখা। মঙ্গলবার বিকল্প মাধ্যমে বিকল্পের কথা কর্মসূচিতে ভোটারদের উদ্দেশে বার্তা দেবেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। বুধবার ওই কর্মসূচিতে প্রচার করবেন কামারহাটি বিধানসভা কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী তথা সিপিএমের নেতা সায়নদীপ মিত্র। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন সাংসদ শমীক লাহিড়ি মুখোমুখি হবেন ভোটারদের। শুক্রবার বর্ধমান দক্ষিণের সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী তথা সিপিএম যুবনেত্রী পৃথা তা থাকবেন বিকল্প মাধ্যমের কর্মসূচিতে। শনিবার প্রচার করবেন সিপিএমের সংখ্যালঘু মুখ আকিক হাসান। পাঁচ দিনের কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগেই পরবর্তী বক্তাদের নাম ঘোষণা করা হবে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণের জন্য সেভাবে প্রচার করা যাচ্ছে না। তাই সমস্ত বিকল্প পথকেই বাকি তিন দফার নির্বাচনের প্রচারে ব্যবহার করতে চান সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএমের ডিজিটালের এক প্রতিনিধির দাবি, এই প্রচারের সুফল পাচ্ছে বামফ্রন্টের শরিক দলগুলোর পাশাপাশি সংযুক্ত মোর্চায় তাদের শরিক কংগ্রেস এবং আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টও। এমন অভিনব প্রচার পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তাঁরাই আমদানি করেছেন বলেও দাবি ওই প্রতিনিধির।