কংগ্রেসকে নিয়ে দখল হওয়া দলীয় কার্যালয় পুনরুদ্ধার করছে বামেরা। কোচবিহারের খাগড়াবাড়িতে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
একা সম্ভব হয়নি। এ বার জোটের জোরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা। কোথাও খোলা হচ্ছে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ পড়ে থাকা দলীয় কার্যালয়। কোথাও আবার দখল হয়ে যাওয়া পার্টি অফিসে শাসক দলের পতাকা নামিয়ে তোলা হচ্ছে লাল পতাকা। এই ছবি নজরে আসছে রাজ্যের বহু এলাকাতেই।
ছ’বছর পরে সোমবার শাসন সংলগ্ন খড়িবাড়িতে সিপিএমের বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা দলীয় অফিস গিয়ে খুললেন বাম-ডান দু’পক্ষের নেতা-কর্মীরা। ‘বাধা’ দেওয়ার সাহস দেখাল না তৃণমূল।
উত্তর ২৪ পরগনার শাসন-খড়িবাড়ি এলাকায় বামেরা ঢুকলেই বাধা দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছিল তৃণমূল। বামেদের এক সময়ের খাসতালুক শাসন-খড়িবাড়িতে গত বিধানসভার আগে থেকেই একে একে এলাকা ছাড়া হয়েছিলেন বাম নেতা কর্মীরা। এখনও এলাকা ছাড়া হয়ে রয়েছেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা মজিদ আলি ওরফে মজিদ মাস্টার। তাঁরা এলাকায় ঢুকলে মহিলারা আঁশ-বটি নিয়ে তৈরি আছে বলে মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
খড়িবাড়ির এই কার্যালয়টি ছাড়াও বারাসত ২ নম্বর ব্লকের আমিনপুর ও শাসনের দু’টি লোকাল কমিটি এবং ৬টি শাখা অফিস এখনও বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। খড়িবাড়ির এই সিপিএমের কার্যালয়টি খুলতে যান হাড়োয়া বিধানসভার সিপিএম প্রার্থী ইমতিয়াজ হোসেন এবং মধ্যমগ্রাম বিধানসভায় কংগ্রেস প্রার্থী তাপস মজুমদার। ছিলেন দু’দলের জেলা নেতৃত্ব ও কর্মীরা। দেখা যায়, দরজা, জানলা সব ভাঙা। সিপিএম নেতা কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘জোট হওয়ায় কর্মীদের মনোবল বেড়েছে। তাই দলীয় অফিস খোলার সাহস দেখানো গেল।’’ তাপসবাবু বলেন, ‘‘জোটের পক্ষ থেকে অফিসটা খুলে দিয়েছি।’’ বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি জ্যোতিপ্রিয়বাবু।
একই ভাবে দু’বছর আগে দখল হয়ে যাওয়া কোচবিহারের খাগড়া বাড়ির ট্রাক টার্মিনাস লাগোয়া বামেদের পার্টি অফিস সোমবার ফের নিজেদের দখলে আনল বামেরা। এ দিন সকালে বাম ও কংগ্রেস সমর্থকরা মিছিল করে ট্রাক টার্মিনাসে যান। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দা সাহা বলেন, “আমাদের অফিস আর জোর করে আটকে রাখতে পারবে না তৃণমুল। মানুষ এখন
জোটের সঙ্গে।’’ শাসক দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেন, “তৃণমূল কারও পার্টি অফিস দখল করেনি। ট্রাক টার্মিনাসে আমাদের অফিস দখল করেছে বামেরা।’’
শুধু ওই পার্টি অফিসটিই নয়, জোট হওয়ার পরে কোচবিহারের দেওয়ানহাট, ঘুঘুমারি, শিকারপুর, শীতলখুচি, ভবেরহাট সহ প্রায় ১০টি পার্টি অফিস ফিরিয়ে নিতে পেরেছেন তাঁরা। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায় বলেন, “মানুষ আর ভয় পাচ্ছেন না। তাই পার্টি অফিসগুলি দখলমুক্ত হচ্ছে।”