West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: মার-পাল্টা মারে ফুটছে নন্দীগ্রাম, ‘জঙ্গলরাজ চলছে’, অভিযোগ করলেন শুভেন্দু

বুধবার রাতে তৃণমূলের একদল কর্মীর উপর হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপি-র বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী জখম হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২১ ১৫:২৪
Share:

গোটা দেশের কৌতূহল রয়েছে যে আসন ঘিরে, সেখানে রোজ রোজ হিংসার ঘটনা ঘটছে।

ভোটের দিন যত এগোচ্ছে, ততই ক্রমশ অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে নন্দীগ্রাম। তৃণমূল-বিজেপি— দু’পক্ষই মার এবং পাল্টা মারের পথে হাঁটছে। দিন এবং রাতের বিভিন্ন সময়ে যুযুধান দু’পক্ষের মধ্যে বচসা, হাতাহাতি এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। তবে সেই সংঘর্ষে প্রথম রক্ত ঝরল বৃহস্পতিবার। ঘটনাচক্রে, যেদিন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর এলাকায় বেশ কয়েকটি নির্বাচনী প্রচারসভা করার কথা। ভোট ঘোষণার পর থেকেই নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি একটু একটু করে ‘গরম’ হচ্ছিল। কিন্তু এখন কার্যত ‘ফুটতে’ শুরু করছে বিধানসভা ভোটের এই ওজনদার কেন্দ্র। ঘটনাক্রম অন্তত তেমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে। গোটা দেশের কৌতূহল রয়েছে যে আসন ঘিরে, সেখানে রোজ রোজ হিংসার ঘটনা ঘটছে। কিন্তু এত কিছুর মধ্যে কোথাও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দেখা যায়নি।

Advertisement

বুধবার রাতেই তৃণমূলের একদল কর্মীর উপর হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপি-র বিরুদ্ধে। একটি কর্মিসভায় যোগ দিয়ে ফেরার পথে তৃণমূলের এক যুবনেতা আক্রান্ত হন। গাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি দুষ্কৃতীরা ওই তৃণমূল নেতা এবং তাঁর সঙ্গীদেরও মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটির পিছনে বিজেপি নেতা শুভেন্দু ও তাঁর অনুগতদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে তৃণমূল। এর পরেই বৃহস্পতিবার সকালে উত্তপ্ত হয়ে উঠল নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া এলাকা। দু’পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী গুরুতর জখম হন। আহতদের উদ্ধার করে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে গড়চক্রবেড়িয়াতেও গন্ডগোল হয়। দু’টি ঘটনাতেই বিজেপি অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূলের দিকে। যদিও তৃণমূল পাল্টা দাবি করেছে, বিজেপি-র মারে তাদের দলেরই কয়েকজন আহত হয়েছেন। তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘এলাকায় উত্তেজনা ছড়াতে আসছেন শুভেন্দু। তাঁর দলবলই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উপরে প্রথমে হামলা চালায়।’’

ঘটনার খবর পেয়েই সোনাচূড়ায় পৌঁছন শুভেন্দু। বিজেপি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামের পাঁচ জায়গায় শুভেন্দু পথসভা ও জনসংযোগ যাত্রা করবেন। সোনাচূড়ার পথসভায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘এসব পেঁচি মস্তানদের ভয় পাবেন না। বাইরে যাঁরা আছেন, তাঁদের বাড়িতে ডাকুন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে নির্ভয়ে ভোট দিতে যাবেন।’’ পরে গড়চক্রবেড়িয়ায় গন্ডগোলের পর তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গলরাজ চলছে। আমি পর্যবেক্ষকদের জানাব। এখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রসাদ আসছেন। তিনিও দিল্লিতে গিয়ে বলবেন।’’

Advertisement

তবে নন্দীগ্রাম ব্লক তৃণমূলের সভাপতি স্বদেশ দাস দাবি করেন, শুভেন্দুর কারণেই নন্দীগ্রামে অশান্তি বেধেছে। তাঁর কথায়, ‘‘শুভেন্দুবাবু বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর থেকেই নন্দীগ্রামে গোলমাল শুরু হয়েছে। বুধবার রাতেও তৃণমূল নেতাদের উপর হামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবারেও নন্দীগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি। এলাকার মানুষ তার প্রতিবাদ করবে।’’ তৃণমূল কোনও হামলার সঙ্গে জড়িত নয় বলেই দাবি করেছেন স্বদেশ। অন্য দিকে, বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পালেরও একই দাবি। তিনি বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে নন্দীগ্রাম বেশ উত্তপ্ত। তার মধ্যেই তৃণমূলের কিছু বহিরাগত প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে নানা তথ্য সংগ্রহ করছে। পাশাপাশি, ভোটের প্রচারও করছে। সে সব নিয়েই এলাকাবাসীর সঙ্গে কিছু দ্বন্দ্ব হয়ে থাকতে পারে। বিজেপি এর সঙ্গে কোনওভাবেই জড়িত নয়।’’

কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যের সর্বত্র এসেছে। কিন্তু নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকের কোথাও তাদের দেখা মেলেনি। স্থানীয়দের দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও এখনও তাদের নন্দীগ্রামে মোতায়েন করা হয়নি। এ ব্যাপারে জানতে একাধিক বার ফোন করা হয় পূর্ব মেদিনীপুরে সদ্যনিযুক্ত পুলিশ সুপার সুনীল যাদবকে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি হোয়াটসঅ্যাপেরও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement