নগরপালকে নিয়ে বিরোধীদের এ যাবত্ যাবতীয় অভিযোগে সিলমোহর দিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। কলকাতা পুলিশ কমিশনারের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদের কোনও ব্যক্তিকে সরানোর ঘটনা নজিরবিহীনই নয়, এই শহর এবং রাজ্যের পক্ষে অত্যন্ত অসম্মানেরও।
অপমানিত হতে হল অনেককেই। প্রথম রাজীব কুমার নিজে। মানুষের সেবা করার শপথ নিয়ে পুলিশের চাকরিতে এসে শাসক দলের সেবক হিসাবে নিজেকে যে ভাবে প্রতিষ্ঠিত করলেন তিনি তা শুধু অগৌরবেরই নয়, কলঙ্কেরও। রাজীব কুমার শুধু নিজের জন্যই অপমানকে আমন্ত্রণ করলেন তা নয়, অপমানিত হতে হল তাঁর স্বজাতিবর্গকেও। আইপিএস অফিসারদের প্রফুল্ল বদন হওয়ার মতো কোনও অবকাশ তো নির্বাচন কমিশন দিল না।
অপমান রাজ্য সরকারেরও। শাসক দলের অনুকূল পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছেন কেনও অফিসার এবং তাঁকে পদে বহাল রাখা হচ্ছে এতে দু’টি বিষয় প্রতিপদ হয়— এক, সরকারেরই অঙ্গুলীহেলনে এই অপকর্মটি অবাধে চলে আসছে এবং দুই, এ সরকার শুধু ‘আমরা’র সরকার, সবার নয়। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত কোনও সন্দেহ নেই রাজ্য সরকারের উদ্দেশেও কঠোর অঙ্গুলী নির্দেশ।
অতএব, সব মিলিয়ে দিনের শেষে চূড়ান্ত অসম্মানের মুখে দাঁড়িয়ে আমরা, এ রাজ্যের আম নাগরিক। অসম্মান শুধু এই কারণেই নয়, অসম্মান শুধু এই নির্দেশের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পক্ষপাতদোষের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের সিলমোহর। অসম্মান এই কারণেও যে, এর পরেও শিক্ষা নেবে না কোনও পক্ষই। প্রাক্তন নগরপাল তুষার তালুকদার যেমনটা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভোট মিটে গেলে আবার গুরুত্বপূর্ণ পদেই বহাল হবেন অপকর্মে অভিযুক্ত এই অফিসার। আমরা কী ভাবলাম, কী ভাবলাম না, তা নিয়ে আর মাথা ঘামাবে না সরকার অথবা এই অফিসারদের নিয়ে চলতে থাকা প্রশাসন।