রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে (বাঁ দিক থেকে) প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা, রাহুল গান্ধী এবং সচিন পাইলটের সঙ্গে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। বুধবার। জয়পুরে। ছবি: পিটিআই।
এক মাস আগে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু হলেও রাহুল গান্ধীর পাশে একবারও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে দেখা যায়নি। আজ সনিয়া গান্ধী রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার মনোনয়ন জমা দিলেন। তাঁর পাশে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে প্রিয়ঙ্কাকেও দেখা গেল। কিন্তু রাহুল বা প্রিয়ঙ্কা এ বার গান্ধী পরিবারের পুরনো লোকসভা কেন্দ্র, অমেঠী-রায়বরেলী থেকে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হবেন কি না, তা নিয়ে কংগ্রেস নেতারা এখনও তিমিরে।
পাঁচ বার লোকসভার সাংসদ থাকার পরে আজ সনিয়া গান্ধী রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। প্রথম পাঁচ বছর তিনি অমেঠী থেকে লোকসভার সাংসদ ছিলেন। তার পরে কুড়ি বছর রায়বরেলীর সাংসদ। রাহুল গান্ধী গত লোকসভা ভোটে অমেঠী থেকে ভোটে লড়ে হেরে গিয়েছিলেন। কেরলের ওয়েনাড থেকে জেতার সুবাদে লোকসভার সাংসদ হন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাহুল এ বারও ওয়ানাড থেকে প্রার্থী হবেন, তাতে কোনও সংশয় নেই। কিন্তু তার পাশাপাশি অমেঠি বা রায়বরেলী থেকে প্রার্থী হবেন কি না, সে উত্তরও মেলেনি। কংগ্রেসের বড় অংশ চাইছে, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা এ বার রায়বরেলীতে প্রার্থী হোন। সমাজবাদী পার্টি ইতিমধ্যেই অমেঠি-রায়বরেলীতে কংগ্রেসকে সমর্থন করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, গান্ধী পরিবারের কেউই অমেঠি-রায়বরেলী থেকে প্রার্থী না হলে উত্তরপ্রদেশ-সহ গোটা হিন্দি বলয়েই ভুল বার্তা যাবে।
কিছু দিন আগে সনিয়ার রাজ্যসভায় জিতে আসার পরিকল্পনা নিয়ে কটাক্ষ করে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, কেউ কেউ হারের ভয়ে নিরাপদে রাজ্যসভায় যেতে চাইছেন। বিহারের বিজেপি নেতা সম্রাট চৌধুরীর কটাক্ষ, “এর পরে রাহুল গান্ধীকেও রাজ্যসভা থেকে জিতে সংসদে যেতে হবে।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের টীপ্পনী, “সনিয়া গান্ধী ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, না কংগ্রেস ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, তা জনতা ঠিক করবে।” সনিয়া গান্ধী-সহ আজ রাজ্যসভার নির্বাচনের জন্য দশ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ রাজ্যসভার আসনের জন্য সনিয়ার কাছে দরবার করেছিলেন। সূত্রের খবর, রাহুল গান্ধী কমলকে রাজ্যসভায় পাঠানোর বিরুদ্ধে ছিলেন। তাঁর বদলে প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি অশোক সিংহকে প্রার্থী করা হয়েছে। তা নিয়ে দলে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ অশোক টানা তিন বার লোকসভায় হেরেছেন।
তেলঙ্গানা থেকে প্রার্থী করা হয়েছে ইউপিএ সরকারের মন্ত্রী রেণুকা চৌধুরি ও তেলঙ্গানা যুব কংগ্রেসের নেতা অনিল কুমার যাদবকে। কেন রেণুকা ফের রাজ্যসভায়, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে দলে। কর্নাটক থেকে রাজ্যসভায় পাঠানো হচ্ছে কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেনকে। বিহারের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অখিলেশ প্রসাদ সিংহকে আরজেডি-র সমর্থন নিয়ে রাজ্যসভায় পাঠানো হচ্ছে। মহারাষ্ট্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য চন্দ্রকান্ত হান্ডোরে-কে। কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি এত দিন তৃণমূলের সমর্থনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় সাংসদ ছিলেন। এ বার তাঁকে হিমাচল থেকে রাজ্যসভায় পাঠানো হচ্ছে। মনু সিঙ্ঘভি বলছেন, তিনি হিমাচলের অনেক মামলা সুপ্রিম কোর্টে লড়েছেন। তা ছাড়া তাঁর বড় পুত্রবধূ হিমাচলের মেয়ে। সে খবর অনেকেই জানে না।