ঘাটালের সাংসদ দেব। —ফাইল চিত্র।
তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কমিটি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত কেন নিলেন ঘাটালের সাংসদ দেব? পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রাজনৈতিক মহলে এটাই এখন চর্চার বিষয়। তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি, একটি ফোনের পরেই নাকি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেব।
লোকসভা ভোটের মুখে দেবের এমন সিদ্ধান্ত প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, তা হলে কি ঘাটাল কেন্দ্র থেকে দলের প্রার্থী হচ্ছেন না দেব? ঘটনাচক্রে, তিনি ঘাটাল কলেজ, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিজেপি এলাকায় পোস্টার সাঁটিয়ে সাংসদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, তৃণমূল সূত্রের দাবি, দেবের কাছে ফোনটিও সম্ভবত এসেছিল এমনই কোনও বিষয় নিয়ে।
তৃণমূলেরই একটি সূত্রে দাবি, পুলিশ-প্রশাসন ও দলের সর্বোচ্চ মহলে দেবের অনুগামীদের বিরুদ্ধে নিয়োগ সংক্রান্ত এবং আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছে। প্রশাসনের উচ্চ মহল থেকে সেই সংক্রান্ত বিষয়েই নাকি ফোন এসেছিল দেবের কাছে, দাবি ওই সূত্রের। তার পরই তিন পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন সাংসদ। ই-মেলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকের কাছে। যদিও জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, এই সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ জেলাশাসকের দফতরে জমা পড়েনি।
তবে ঘাটালের স্থানীয় মহলে কান পাতলে শোনা যায়, দেবের নাম করে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ বেশ কয়েক বছর ধরেই রয়েছে। রয়েছে সাংসদের নাম ব্যবহার করে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগ। তা ছাড়া, সমবায়ে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে কোটি টাকার উপরে ঋণ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সাংসদ অনুগামীর বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এ সবের দায় কি দেব একেবারে ঝেড়ে ফেলতে পারেন?
ভোটের মুখে বিজেপিও এখন দেবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে হাতিয়ার করছে। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তন্ময় দাস বলছেন, ‘‘দুর্নীতির কারণেই দেবকে সিবিআই ডেকেছিল।’’ দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে ঘাটালে সাংসদের প্রতিনিধি রামপদ মান্নার দাবি, ‘‘অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই।’’ তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিধায় শঙ্কর দোলুইয়েরও দাবি, ‘‘এ সব বিজেপির অপপ্রচার।’’ আর তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠন জেলা সভাপতি আশিস হুতাইত বলেন, ‘‘অভিযোগ যে কারও বিরুদ্ধে উঠতে পারে। প্রশাসন নিশ্চয়ই তা খতিয়ে দেখবে।’’