সন্দেশখালি ‘স্টিং অপারেশন’ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি। —ফাইল চিত্র।
শমীক জানান, ভিডিয়ো সম্পূর্ণ ভুয়ো। বিরোধী দলনেতাকে কালিমালিপ্ত করতে এটা ঘটানো হয়েছে। এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে তৃণমূল আসলে সন্দেশখালির নির্যাতিতাদেরই অপমান করল।
বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন, সন্দেশখালির আন্দোলনের সঙ্গে গঙ্গাধরের কোনও যোগ নেই। তাঁরা চান, সন্দেশখালি নিয়ে যে ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে, তার সিবিআই তদন্ত হোক।
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, গঙ্গাধর সভাপতি নন। দলের সমর্থক মাত্র। তিনি মানসিক ভাবে সুস্থ নন বলেও দাবি করেছেন বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি বিবেক রায়। তিনি বলেন, ‘‘এর আগেও ওঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। বছরখানেক আগে একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের লোকজনের হাতে মারও খেয়েছিলেন।’’
রাজ্য বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র তরুণজ্যোতি তিওয়ারি প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়োটি নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি। তবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল সব কিছুতেই সাজানো ঘটনা দেখে। সন্দেশখালির মহিলারা এসে কোর্টে তাঁদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন। রেখা পাত্রের অভিযোগের ভিত্তিতে শিবপ্রসাদ হাজরার বিরুদ্ধে ১৬৪ ধারা দেওয়া হয়েছে। সন্দেশখালির ঘটনাকে কোনও ভাবেই তৃণমূল আড়াল করতে পারবে না।’’
শনিবার সকালে ওই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরই সমাজমাধ্যমে আক্রমণ শানাতে শুরু করে তৃণমূল। দলের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডল থেকে একটি পোস্ট করে তারা লেখে, ‘‘দেখা যাচ্ছে বাংলাকে অসম্মানিত করার জন্য চেষ্টার কোনও কসুরই রাখেনি বিজেপি। গণধর্ষণের অভিযোগ থেকে শুরু করে অস্ত্র বাজেয়াপ্ত— সমস্ত কিছুই সাজিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এই বাংলা-বিরোধীদের ক্ষমা করবেন না বাংলার মা-বোনেরা। এর প্রতিশোধ নেবেন তাঁরা।’’
পরে অভিষেকও একটি পোস্টে লেখেন, ‘‘গোপন ক্যামেরায় তোলা সন্দেশখালির ভিডিয়ো দেখে আমি স্তম্ভিত। বাংলার প্রতিটি মানুষের দেখা উচিত, এই বাংলা-বিরোধী বিজেপি কী ভাবে তাদের রাজনৈতিক ফয়দা তোলার জন্য বাংলাকে অসম্মানিত করেছে। একেই বলে ক্ষমতার অপব্যবহার, লজ্জা!’’
পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একটি এক্স পোস্টে লেখেন, ‘‘বিজেপির মনে বাংলা-বিরোধী মনোভাব আর বাংলার প্রতি ঘৃণা কতটা গভীর, তা এই ষড়যন্ত্রে স্পষ্ট। ভারতের ইতিহাসে আগে কখনও দিল্লির শাসকদল এ ভাবে আমাদের রাজ্যকে অসম্মানিত করার চেষ্টা করেনি। কিন্তু এর পর বাংলা এর জবাব দিতে যে ভাবে জাগবে, তা ইতিহাস তৈরি করবে।’’
গোপন ক্যামেরায় তোলা একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে শনিবার সকালে। সেখানে গঙ্গাধর কয়াল নামে এক ব্যক্তি নিজেকে বিজেপি নেতা বলে দাবি করে জানান, সন্দেশখালিতে ‘ধর্ষণের অভিযোগ সাজানো’! ওই ভিডিয়োতে গঙ্গাধরকে বলতে শোনা গিয়েছে, তিনি সন্দেশখালি-২ ব্লকের বিজেপির ‘মণ্ডল সভাপতি’।
৩২ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের সন্দেশখালি ‘স্টিং অপারেশেনের’ ভিডিয়ো ঘিরে রাজ্য জুড়ে হইচই! তাতে অভিযোগ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায় ‘ধর্ষণের অভিযোগ সাজানো’ হয়েছিল। ভিডিয়োটির সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। সেই আবহে শনিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক বসল রাজ্য বিজেপি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন দলীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। সঙ্গে রয়েছেন রাজ্য বিজেপির আইনি শাখার আহ্বায়ক লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়।
শুভেন্দু অবশ্য বলেছেন, ‘‘ভিডিয়োটি আমি দেখিনি। কার গলা খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে কথা বলব।’’