Lok Sabha Election 2024

রাজনীতিতে আনকোরা শর্মিলাই প্রার্থী পূর্বে

শর্মিলা থাকেন দমদমে। তাঁর বাপেরবাড়ি কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ হাসপাতাল পাড়ায়। তাঁরা পাঁচ বোন, এক ভাই। বাবা অগ্রদ্বীপ বাজারে আনাজ বিক্রি করতেন।

Advertisement

প্রণব দেবনাথ

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৪ ০৯:৩৬
Share:

শর্মিলা সরকার (বাঁ দিকে), প্রার্থীর নামে দেওয়াল লিখন (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে তৃতীয় বারের প্রার্থী যে সুনীল মণ্ডল হবেন না, তা এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। জেলার নানা এলাকার নিচুতলার নেতা থেকে অরাজনৈতিক মুখ নিয়ে চর্চা চলছিল। রবিবার জনগর্জন সভা থেকে যাঁকে প্রার্থী করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনি রাজনীতির মাঠে একেবারেই আনকোরা।

Advertisement

প্রার্থী শর্মিলা সরকার পেশায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক (অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর)। পূর্ব বর্ধমানের সঙ্গে যোগসূত্র বলতে স্কুল, কলেজে পড়াশোনা। তবে সেই সময় বা পরেও রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না তাঁর। শর্মিলা বলেন, ‘‘চিকিৎসক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, সমাজসেবা করাটা খুবই প্রয়োজনের। একটা ভাল মঞ্চ খুঁজছিলাম। তৃণমূল আমাকে প্রার্থী করে সেই সুযোগ দিয়েছে। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞ।’’

শর্মিলা থাকেন দমদমে। তাঁর বাপেরবাড়ি কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ হাসপাতাল পাড়ায়। তাঁরা পাঁচ বোন, এক ভাই। বাবা অগ্রদ্বীপ বাজারে আনাজ বিক্রি করতেন। অভাবের সংসারেই বড় হয়ে ওঠা তাঁর। অগ্রদ্বীপ ইউনিয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৫ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন। ১৯৯৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কাটোয়া কলেজ ফিজিক্স অনার্সে ভর্তি হন। তার পরেই ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়ে চলে যান আর জি করে। সেখান থেকে এমবিবিএস, এসএসকেএম থেকে এমডি করেন। তারপরে চাকরি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। শর্মিলার স্বামী সুদীপ ঘোষও চিকিৎসক। তাঁদের একমাত্র মেয়ে দমদমেই নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।

Advertisement

শর্মিলার দিদি জয়া সরকার মজুমদার কাটোয়ার গাজিপুর পঞ্চায়েতে ১৯৯৮ ও ২০১৩ সালে প্রধান ছিলেন। প্রার্থী হয়েছিলেন জেলা পরিষদেও। জামাইবাবু সুব্রত মজুমদার দীর্ঘ দিন কাটোয়া ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। কাটোয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষও ছিলেন। তবে দলেরই একাংশের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে প্রায় বছর তিনেক ধরে সুব্রতবাবু খানিক ‘নিষ্ক্রীয়’। যদিও তৃণমূল সূত্রের খবর, লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীর খোঁজ শুরু হতেই দলের এক মন্ত্রী সুব্রতর উপরেই ভরসা করেন। সুব্রত বলেন, “আমার শ্যালিকা অত্যন্ত মেধাবী। রাজনৈতিক পরিবেশেই সে বড় হয়েছে। দল তাঁকে প্রার্থী করায় আমরা খুশি। ভোটে জেতানোর জন্য দল ডাকলে নিশ্চই প্রার্থীর হয়ে কাজ করব।”

দলের দ্বন্দ্ব এবং নেতাদের যোগসাজশেই প্রার্থিপদ হারাতে হয়েছে বলে দাবি করেছেন সাংসদ সুনীল মণ্ডল। তাঁর দাবি, “জেলার দুই নেতার লাগাতার চেষ্টার ফলেই আমি এ বার টিকিট পেলাম না। প্রার্থী হলে দেড় লক্ষ ভোটে জিততাম। তবে দল ও নতুন প্রার্থীর সাফল্য কামনা করছি।” প্রার্থীর হয়ে ভোট প্রচারে নামবেন? সুনীলের জবাব, ‘‘এখন ও সব কিছু ভাবছি না। কিছু প্রশ্নের উত্তর ভবিষ্যতের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।’’

দ্বন্দ্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাবধানী জবাব দেন শর্মিলাও। তিনি বলেন, ‘‘প্রচুর মানুষের শুভেচ্ছা পাচ্ছি। সবাইকে নিয়ে, সবার সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রেখেই কাজ করার চেষ্টা করব।’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা খুবই ভাল প্রার্থী পেয়েছি। দলের নির্দেশ অনুযায়ী দ্রুত নির্বাচনের যাবতীয় কাজ শুরু করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement