অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
দলীয় কর্মীকে চড় মারার অভিযোগে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে অধীর চৌধুরীর পার্টি অফিস ঘিরে বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূল। পার্টি অফিসে ‘হামলা’ হতে পারে, এই দাবি করে নির্বাচন কমিশনে গেল কংগ্রেস।
শনিবার সকালে অধীরের বিরুদ্ধে ভোটপ্রচার চলাকালীন এক তৃণমূল কর্মীকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছিল। ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিকেলে বহরমপুরে জেলা কংগ্রেসের পার্টি অফিসে জমায়েত হন শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। চলে স্লোগান, বিক্ষোভ। সেখানে দাঁড়িয়ে বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীরকে নিশানা করেন বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তারক্ষীদের ব্যবহার করে সন্ত্রাস চালাচ্ছেন অধীর। এ নিয়ে আদালতে যাব।’’
এ নিয়ে কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, সুবিধা অ্যাপের মাধ্যমে কোনও অনুমতি না নিয়েই মিছিল করেছে শাসকদল। জেলা কংগ্রেসের পার্টি অফিসে জমায়েত হয়ে হুমকিও দিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। এতে বিধিভঙ্গ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস।
শনিবার ভোটারদের সঙ্গে জনসংযোগ চলাকালীন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা অধীরকে ঘিরে ‘গো ব্যাক’ আওয়াজ দিতে থাকেন। বিক্ষোভের জেরে আটকে যায় বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থীর গাড়ি। গাড়ি থেকে নেমে পড়েন অধীর। তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে বাগ্যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন তিনি। অভিযোগ, সেই সময় এক তৃণমূল কর্মীকে হুমকি দেন তিনি। তাঁকে ধাক্কা দেন। চড়ও মারেন। অন্য দিকে, গন্ডগোলের খবর পেয়ে কিছু ক্ষণের মধ্যে পুলিশ বাহিনী পৌঁছে যায়। বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে কংগ্রেস প্রার্থীকে উদ্ধার করে তারা। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। তৃণমূলের অভিযোগ, জনভিত্তি হারিয়ে মেজাজ হারাচ্ছেন অধীর। তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলেছে শাসকদল। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বিকাশ সামন্ত নামে এক তৃণমূল কর্মীর দাবি, ‘‘অধীর চৌধুরী গাড়ি থেকে নেমে এসে এক জনের গায়ে হাত তোলেন। ওঁর কোনও অধিকার নেই এক জনের গায়ে হাত তোলার। ওঁকে ভুল স্বীকার করতে হবে।’’
পাল্টা কংগ্রেস প্রার্থী অভিযোগ করেন, পরিকল্পনা করে তাঁর প্রচারে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল। তিনি কটাক্ষের সুরে বিক্ষোভকারীদের ‘চুল্লুখোর’ বলে আক্রমণ করেন। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই তিনি জেলা পুলিশ সুপারকে ফোন করেন। জানান, বিষয়টি নির্বাচন কমিশনেরও নজরে আনবেন। অধীর বলেন, ‘‘তৃণমূল ওদের চুল্লুখোরদের দিয়ে আমার প্রচার আটকাবে, তা মানব কেন? নেশা করে ‘গো ব্যাক’ বলবে, প্রতিবাদ তো করবই। আর সেটাই করেছি। চার দিকে সিসিটিভি আছে, দেখলেই প্রমাণ পাবেন, আদৌ গায়ে হাত দিয়েছি কি না।’’
এই গন্ডগোল নিয়ে বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গান্ধী কলোনির মতো জায়গায় যেখানে এক সময় অধীর চৌধুরীকে ‘মসিহা’ মনে করতেন মানুষজন, সেখানে আজ তিনি বিক্ষোভের মুখে। তাই অধীর চৌধুরীর জনভিত্তি শুধু তলানিতে নয়, মাটিতে মিশে গিয়েছে।’’