বোলপুর নিচুপট্টিতে নায়েকপাড়ায় মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ শনিবার দুপুরে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন। পিছনে অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ কৃপাময় ঘোষ(নীল গেঞ্জি)। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
মাঝে কেটে গিয়েছে দেড় বছর। আরও এক বার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গাড়ি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাহারা এবং দিনভর তল্লাশি দেখল বোলপুরের নিচুপট্টি। অনুব্রত মণ্ডলের পরে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের বাড়িতে। গরু পাচার তদন্তের পরে এ বারে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত।
শুক্রবার সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ চন্দ্রনাথের বাড়িতে আসেন ইডির আধিকারিকেরা। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে বাড়ি ঘিরে ম্যারাথন তল্লাশি অভিযান এবং জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব সেরে গোয়েন্দারা রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সেখান থেকে বেরিয়ে যান। লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতা তথা দলের কোর কমিটির এক সদস্যের বাড়িতে এমন অভিযানে নিচুতলার তৃণমূল কর্মীদের মনোবলে ধাক্কা লাগবে কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এই মুহূর্তে চন্দ্রনাথের দায়িত্বে রয়েছে মুরারই, নলহাটি ও বোলপুর বিধানসভা। শনিবার চন্দ্রনাথ সংবাদমাধ্যমেকে কিছু বলতে চাননি। তবে, এই ঘটনার পরে মন্ত্রীর পক্ষে এখনই সাংগঠনিক কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া সহজ হবে কি না, দলের অন্দরে সংশয় তৈরি হয়েছে। এই নিয়ে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। ফোন ধরেননি কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীও।
তবে, তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার ইডি-সিবিআই লেলিয়ে দিয়ে বিরোধীদের ভাঙতে চাইছে।’’ তাঁর দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্যই মন্ত্রীর বাড়িতে অভিযান। যদিও তৃণমূল কর্মীদের একাংশের মতে, কোর কমিটি থেকে কাজল শেখের বাদ পড়ার পরে সংগঠনের কাজে ছোটাছুটি বাড়িয়ে ছিলেন চন্দ্রনাথ এবং বিকাশ রায়চৌধুরী। চন্দ্রনাথের বাড়িতে ইডি হানা দেওয়ার পরে সেই উদ্যম ধাক্কা খাবে। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘সত্যি-মিথ্যার চেয়েও বড় বিষয় হল, এমন তল্লাশির পরে সাধারণ মানুষের মনে নানা প্রশ্নের উদয় হয়। তা নিরসন করা সহজ নয়।’’