(বাঁ দিক থেকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস এবং বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
দিলীপ ঘোষের ঘরে বৌ নেই, তিনি বিবাহিত নন, সেই কারণেই নারীদের সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করতে পারেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে দিলীপের বক্তব্য নিয়ে এমনটাই মত বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের। তিনি জানান, স্ত্রী থাকলে কোনও নারী সম্পর্কে এমন মন্তব্য করার জন্য দিলীপকে নিজের বাড়িতেই ‘ধোলাই’ খেতে হত।
সম্প্রতি, মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে বেশ কিছু মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ। যা শালীনতার সীমা অতিক্রম করেছে বলে দাবি করে তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানিয়েছিল তৃণমূল। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার সন্ধ্যায় বর্ধমানের কার্জন গেটের সামনে তৃণমূলের তরফে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। দিলীপের কুশপুতুলও দাহ করা হয় সেখানে। ওই কর্মসূচি চলাকালীন খোকন বলেন, ‘‘আমি শুনেছি, দিলীপ বিয়ে করেননি। সেই কারণেই মা, বোন সম্বন্ধে, নারী জাতি সম্বন্ধে এমন কথা বলতে পেরেছেন। কারণ বিয়ে করলে মেয়েদের সম্পর্কে এমন কথা বলে আগে ঘরে গিয়ে বৌয়ের ধোলাই খেতে হত। আমি যদি এমন কিছু বলতাম, আমাকে বৌ পেটাত।’’
খোকন আরও বলেন, ‘‘বর্ধমান-দুর্গাপুরে আমাদের যত ভোটার আছেন, তাঁদের কাছে আমার অনুরোধ, এমন একটা মানুষকে আপনারা ভোট দেবেন না। বিজেপি এমন এক জনকে এখানে দাঁড় করিয়েছে, যিনি মা-বোনেদের সম্মান দিতে জানেন না। ওঁকে আপনারা কী ভাবে ভোট দেবেন? ওঁর মন্তব্য নিয়ে আমাদের দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। কমিশন কী পদক্ষেপ করে, সেটা দেখার।’’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই দিলীপের মন্তব্যের নিন্দা করে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শো-কজ় নোটিস ধরান তাঁকে। যত দ্রুত সম্ভব এ হেন আচরণের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনও তৃণমূলের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে এবং প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট নিয়ে দিলীপকে শো-কজ় করে। জোড়া শো-কজ়ের পর দিলীপের বিরুদ্ধে বর্ধমান-দুর্গাপুরের এক মহিলা থানায় এফআইআরও দায়ের করেন। দিলীপকে বিজেপির শো-কজ় প্রসঙ্গে খোকন বলেন, ‘‘শুধু শো-কজ় করলে তো হবে না। উনি যেখানে যাবেন, সেখানেই অশান্তি করবেন। এটা যাতে বাংলার কোথাও উনি আর করতে না পারেন, তাই ওঁর উচিত শিক্ষা হওয়া দরকার।’’
খোকনের মন্তব্য নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘খোকনের রুচি এবং ভদ্রতা, সভ্যতা তার ব্যবহৃত ভাষা থেকেই প্রমাণিত। আমরা এমন ভাষার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’