দিলীপ ঘোষকে ঘিরে বিক্ষোভ তৃণমূলের। নিজস্ব চিত্র।
কয়েক দিন আগে, বর্ধমানের ছ’নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের কর্মীদের কাছে ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনি শুনেছিলেন বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুরের প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জনসংযোগ করার সময়ে বর্ধমান শহর লাগোয়া, দেওয়ানদিঘির হলদিতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে ফের ওই ধ্বনি দিলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তার মধ্যে দিয়েই হেঁটে যান দিলীপ। বুধবার রাতে ওই এলাকায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের ঘিরে ধরে মারধর করা হয়েছিল বলেও বিজেপির অভিযোগ। যদিও তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
এ দিন সকাল থেকেই জনসংযোগে বার হন দিলীপ। ভাতারের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ওরগ্রামে চা-চক্র সেরে বর্ধমান-সিউড়ি রোড (জাতীয় সড়ক ২বি) ধরে বর্ধমানে ফিরছিলেন। গাড়ি থেকেই তিনি দেখেন, হলদির ব্যাঙ্কের দু’পাশে তৃণমূলের পতাকা হাতে দেড়শো-দু’শো জন দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি হলদি বাসস্টপের কাছে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করে দেন। ব্যাঙ্কের কাছে আসতেই তাঁকে দেখে তৃণমূলের কর্মীরা ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনি দিতে শুরু করে। ‘নারী বিদ্বেষী দূর হটো’ বলেও আওয়াজ ওঠে। তারই মধ্যে প্রায় আড়াইশো মিটার রাস্তা হাঁটেন তিনি। ব্যাঙ্ক-চত্বর পার করে গাড়িতে ওঠেন। তাঁর সঙ্গে থাকা বিজেপি কর্মীরাও পাল্টা ‘চোর, চোর’ বলতে থাকেন। বিজেপির ওই লোকসভার সভাপতি অভিজিৎ তা বলেন, “দিলীপদাকে তৃণমূল ভাল রকম ভয় পেয়েছে বোঝাই যাচ্ছে।”
কয়েক দিন আগে, বর্ধমানের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে রেলের মাঠে জনসংযোগ করছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে বসে থাকে তৃণমূল নেতা শিবশঙ্কর ঘোষের সঙ্গেও তিনি হাত মেলান। তারপরেই বিজেপির একজন বলে ওঠেন, “দিলীপদা প্রার্থী, তৃণমূল ভয় পাচ্ছে।” এর পরেই শিবশঙ্করের নেতৃত্বে তৃণমূলের লোকেরা ‘গো-ব্যাক’ বলে চেঁচাতে থাকে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এ দিন হঠাৎ করে বিজেপি প্রার্থীকে ‘গো-ব্যাক’ বলার কারণ কী? নেতৃত্বে থাকা তৃণমূলের খেতমজুর সংগঠনের বর্ধমান ১ ব্লকের নেতা রাজেন সেন বলেন, “উনি আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর নামে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন। উনি নারী বিদ্বেষী বলে প্রমাণিত। সেই কারণেই তাঁকে রাস্তায় দেখে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি কর্মীরা।” তৃণমূলের বর্ধমান ১ ব্লক সহ-সভাপতি সুভাষ বালোর দাবি, “আমাদের প্রার্থীকে ‘প্যাক’ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। তারই প্রতিবাদ।”
বিজেপির দাবি, বুধবার রাতে হলদি এলাকায় সাংগঠনিক বৈঠক সেরে বাড়ি ফিরছিলেন কয়েক জন। সেই সময়, তৃণমূলের কয়েক জন তাঁদের রাস্তা আটকে মারধর করেন। জেলা বিজেপির যুব মোর্চার সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ সরকারের দাবি, “সাংগঠনিক কাজ সেরে ফিরছিলাম। দে পাড়ার কাছেই রাস্তার উপরে আমাদের ঘিরে ধরে মারধর করা হয়। তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হাতে ধারাল অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল।” দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমাদের এক কর্মীকে মারা হয়েছে শুনে বলেছিলাম যাব। তাই এসেছি। যদি আবার হয়, তাহলে ওদেরকে দাঁড়িয়ে দেখতে হবে, এটা বলার জন্য এসেছি।” তৃণমূলের বর্ধমান ব্লক সভাপতি কাকলি তা গুপ্ত বলেন, “কোনও ঘটনা ঘটেনি। হাসপাতালে একজনও ভর্তি হননি। থানায় অভিযোগ হয়নি। সব অপপ্রচার।”