ধুতি, পাঞ্জাবি পরে মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজ়াদ। — নিজস্ব চিত্র।
কিছু ক্ষণ আগেই গদা হাতে ঘুরে বেড়িয়ে ভোট চেয়েছেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই বাঙালিবাবু সেজে মনোনয়ন জমা দিলেন দিলীপের প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজ়াদ। বর্ধমান-দুর্গাপুরে লড়াই এ বার পৌঁছে গেল চূড়ান্ত লগ্নে। মনোনয়ন জমা দিয়ে অবশ্য প্রতিপক্ষকে বাছা বাছা শব্দে আক্রমণ শানাতে দেখা গেল কীর্তিকে। দিলীপকে কটাক্ষ করে বললেন, ‘‘পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়!’’
ময়দানে লড়াই করাই তাঁর নেশা। একদা সবুজ মাঠে দাপিয়ে খেলে বেড়িয়েছেন, পরবর্তী কালে রাজনীতির ধূসর মাঠেও হাত পাকিয়েছেন। এ বার বাংলার ময়দানে খেলতে নেমেছেন ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য কীর্তি আজ়াদ। তাঁর প্রতিপক্ষ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। দিলীপকে এ বার পুরনো কেন্দ্র মেদিনীপুরে টিকিট দেয়নি বিজেপি। তার বদলে দিলীপ পরীক্ষায় বসছেন বর্ধমান-দুর্গাপুরে। আর নতুন কেন্দ্রে এসে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করে যাচ্ছেন দিলীপ। মনোনয়ন জমা দিতে এসে তারই জবাব দিলেন কীর্তি।
বিশ্বকাপজয়ী তারকা ক্রিকেটার বলেন, ‘‘দিলীপ যেখানেই যাচ্ছেন দুর্গাপুর বা বর্ধমানে মানুষ গো-ব্যাক বলছেন। উনি খবরে থাকার জন্য এ সব বলেন। আমি আগেও বলেছি, পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়!’’ এর পরেই কীর্তির সংযোজন, ‘‘দিলীপ ঘোষের কাছে আর কী-ই বা আশা করা যায়, বলুন? উনি কখন যে কী বলছেন, তা নিজেই জানেন না। কাল বলেছেন, তৃণমূল জনতার সহানুভূতি চায়। আপনার সঙ্গে মানুষের সহানুভূতি না থাকলে আপনি কী ভাবে জেতার আশা করেন? ওঁর মিথ্যা কথা আসলে সবাই ধরে ফেলেছেন।’’
মঙ্গলবার ধুতি পাঞ্জাবির মতো বাঙালি পোশাক পরে বর্ণাঢ্য মিছিল নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে যান কীর্তি। সেই প্রসঙ্গে কীর্তি বলেন, ‘‘মিথিলা আর বাংলার সংস্কৃতির মধ্যে অনেক মিল। আমরা শুভকাজে পাঞ্জাবি পরি, নিজস্ব সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিই। এই দেখুন না, তিন মাসের অনেক আগেই আমি কেমন ভাল বাংলা বলতে পারছি!’’
মঙ্গলবার দুপুরে বর্ধমান টাউনহল থেকে কীর্তির মিছিল বার হয়। প্রার্থী ছাড়াও তাতে ছিলেন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, বিধায়ক খোকন দাস, তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য নেতারা। এসএসসির রায়ে ভোটে কী প্রভাব পড়বে? সে প্রসঙ্গে কীর্তি বলেন, ‘‘এটা ভুল সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই ভুল সিদ্ধান্তে কমবেশি দু’লক্ষ মানুষ প্রভাবিত হবেন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, আমাদের সরকার সুপ্রিম কোর্টে যাবে।’’