শহরে প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।
কোথাও হিন্দিতে লেখা ‘চৌকিদার চোর হ্যা’। আবার কোথাও সরাসরি ভোট-প্রচারের ভাষাই হিন্দি।
বর্ধমান শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের লোকসভা ভোটের দেওয়াল লিখনে নজর টানছে ‘হিন্দি’ ভাষায় লেখা এমন প্রচার। ৪, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড সহ একাধিক দেওয়াল লেখা হয়েছে হিন্দিতে। বিরোধীদের কটাক্ষ, বহিরাগত হিন্দিভাষী প্রার্থীর জন্যই দেওয়াল লেখার এই হিড়িক।
লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী প্রাক্তন খেলোয়াড় কীর্তি আজাদ। বিহারের এই প্রার্থীকে নিয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূল শিবিরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। বিজেপি সাংসদের মতো কীর্তির গায়েও ‘বহিরাগত’ তকমা লাগবে কিনা, সেই জল্পনার মাঝেই প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। শহরের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের দেওয়ালে উঠেছে প্রার্থীর নাম। সেখানে অনেক দেওয়াল লেখা হচ্ছে হিন্দিতে।
বিরোধী শিবিরের মতে, গত বিধানসভা, পুরনির্বাচনে শহরে তেমন হিন্দি দেওয়াল লেখা ছিল না। বহিরাগত প্রার্থীর কারণেই এই ভোলবদল। জেলা বিজেপির মিডিয়া ইন-চার্জ কল্লোল নন্দনের কথায়, ‘‘তৃণমূল দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহিরাগত বলে। আগের সাংসদকেও বহিরাগত বলত। এখন ওরাই বাইরে থেকে প্রার্থী এনে হিন্দিতে দেওয়াল লিখছে।’’ কংগ্রেসের লোকসভা ভোটের জেলা কো-আর্ডিনেটর গৌরব সমাদ্দারও বলেন, ‘‘তৃণমূল গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার। তাই বাইরে থেকে প্রার্থী দিয়ে হারা আসনে জয় চাইছে।’’ রাজনৈতিক শিবিরের একটি অংশের আবার দাবি, অবাঙালি প্রার্থীর প্রতি হিন্দি ভোটকে পাখির চোখ করেই হিন্দিতে দেওয়াল লেখা হচ্ছে।
যদিও তৃণমূলের দাবি, ৩৫টি ওয়ার্ড নিয়ে তৈরি বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার ভোটার ২,৫৭,২৩০ জন। সেখানে হিন্দিভাষী ভোটার প্রায় ৪৮ হাজার। তাঁদের কথা মাথায় রেখে এমন প্রচার। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুরুল আলম বলেন, ‘‘ওয়ার্ডে প্রচুর হিন্দিভাষী লোক আছেন। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই হিন্দিতে দেওয়াল লেখা হয়েছে।’’ রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের মন্তব্য, ‘‘যাঁরা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে পারেননি, তাঁদের আমাদের প্রার্থী নিয়ে কথা বলা একেবারে হাস্যকর।’’