পানিহাটি পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটায় বিদ্ধ পানিহাটি পুরসভা। তাই পুর পরিষেবার বেহাল অবস্থা সেখানে। লোকসভা ভোটের প্রচারেও সেই দুরবস্থাকে এ বার তুলে ধরবে সিপিএম। শনিবার পানিহাটি পুরসভার গেটে আয়োজিত এক অবস্থান-বিক্ষোভে এসে এমনটাই জানালেন দমদম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী।
বস্তুত, ওই সভা থেকেই সিপিএম তাদের ভোটের প্রচার শুরু করে দিল বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের। যদিও সুজন জানাচ্ছেন, এ দিন খড়দহের মিছিল থেকে তিনি ভোটের প্রচার শুরু করেছেন। এ দিন পানিহাটি পুরসভার সামনের সভায় এসে সুজন দাবি করেন, জঞ্জাল জমে থাকার সমস্যায় দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে রাজ্যের এ-গ্রেড প্রাপ্ত ওই পুরসভা। সেখানে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ভাগাড় থেকে স্বাস্থ্য, রাস্তাঘাট-সহ সমস্ত পুর পরিষেবার বেহাল দশা নিয়ে সরব খোদ শাসকদলের পুরপ্রতিনিধিরাই। সেই প্রসঙ্গে সুজন বলেন, ‘‘নাগরিক পরিষেবায় পুরসভা যে ব্যর্থ, তা মানুষ বুঝতে পারছেন। তাই রাজ্য ও দেশের বেহাল অবস্থার পাশাপাশি পানিহাটির কথাও অবশ্যই প্রচারে তুলে ধরা হবে।’’ প্রসঙ্গত, পানিহাটিতে পুরপ্রধানের চেয়ারে কে বসবেন, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শাসকদলের অন্দরেই বিবাদ চলছে। সুজনও এ দিন বলেন, ‘‘কে চেয়ারে বসবেন, আর কে সেটা টেনে নেবেন, এই যদি লড়াই হয়, তা হলে তার ফল ভাল হতে পারে না। দেশ, রাজ্যের মতো পানিহাটি পুরসভাকেও বাঁচাতে হবে।’’
নাম না করলেও দু’বছর আগে পানিহাটির তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি অনুপম দত্তের খুনের ঘটনার কথাও এ দিন সুজনের বক্তব্যে উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ‘‘শপথ নেওয়ার
আগেই এক জন পুরপ্রতিনিধিকে চলে যেতে হল।’’ সিপিএম প্রার্থীর দাবি, জবরদস্তি পুরপ্রতিনিধির শংসাপত্র পেতে চান শাসকদলের লোকজন। তাই নাগরিক পরিষেবার প্রতি তাঁদের কোনও দায়বদ্ধতা নেই। শংসাপত্রটি পুরসভার লুটের ছাড়পত্র হিসাবে ব্যবহার করা হয়।’’ এ দিন সুজনও প্রশ্ন তোলেন পানিহাটির জল প্রকল্প ও ভাগাড় সমস্যা নিয়ে। উঠে এসেছে পুরসভায় বাজেট পেশ না হওয়া এবং আগামী দিনের কাজের দিশা তৈরি না হওয়ার বিষয়ও।
এই প্রসঙ্গে দমদম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় বলেন, ‘‘ক্ষোভ-উষ্মা থাকতেই পারে। তাই অভিযোগও করতেই পারেন। তবে পানিহাটিতে কিছু সমস্যা আছে ঠিকই। তা মেটাতে আমি নিজে হস্তক্ষেপ করেছি।’’ যদিও পানিহাটির বাসিন্দাদের অনেকেই বলছেন, ‘‘আর কবে সমস্যা মিটবে? বোর্ড মিটিং না হওয়ায় আগামী জুন পর্যন্ত নাগরিক পরিষেবার কোনও কাজও হবে না।’’ এ দিন বেহাল পুর পরিষেবার বিরুদ্ধে সরব হয়ে পুরসভার গেটের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভের আয়োজন করেছিলেন স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। সেখানে সভার পরে তাপস রায়ের প্রসঙ্গে সুজন বলেন, ‘‘উনি রাজনীতির পুরনো লোক। পুরনো নেতারাও এখন বুঝতে পারছেন, তৃণমূল আর রাজনীতির দল নয়। লুটেরাদের দল।’’