জনসংযোগ: কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে গৌতম দেব। রবিবার, বরাহনগরে। —নিজস্ব চিত্র।
অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েই আগামীর পথে চলতে হবে। দীর্ঘ অসুস্থতা-পর্ব কাটিয়ে কয়েক বছর পরে ফের ভোটের প্রচারে উপস্থিত হয়ে এমনটাই বললেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা গৌতম দেব। লোকসভা ভোটের আবহে রবিবার বিকেলেই প্রথম তিনি নামলেন ভোট-ময়দানে। বরাহনগরের সিঁথি সার্কাস মাঠের সামনে থেকে সূচনা করলেন মিছিলের।
দমদম লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী ও বরাহনগর বিধানসভা উপনির্বাচনের দলীয় প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্যের সমর্থনে ছিল এ দিনের মিছিল। তাতে পা মেলানোর ইচ্ছা প্রকাশ করে বিকেলে বরাহনগরে আসেন গৌতম। পরনে সেই চেনা সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা, মাথায় টুপি, হাতে কালো বেল্টের ঘড়ি। এ দিন সর্বদা তাঁর পাশে ছিলেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর, ক্ষণিকের জন্য হলেও বহু দিন পরে গৌতমকে ভোট প্রচারে দেখে আপ্লুত কর্মী-সমর্থকেরা।
এ দিন জমায়েতের সামনে এসে গাড়ি থেকে নামেন গৌতম। সুজন ও তন্ময়কে পাশে নিয়ে মিছিলের সূচনা করে, ফের গাড়িতে উঠে কাশীনাথ দত্ত রোড ধরে কয়েকশো মিটার যান। তাঁর চিকিৎসক বলেন, ‘‘উনি এখন অনেকটাই সুস্থ। তবে, শারীরিক ও বয়সজনিত কারণে অল্পেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। মিছিলে হাঁটতে চাইলেও, তীব্র গরমের কারণে বারণ করেছিলাম।’’ গোপাললাল ঠাকুর রোড, দেশবন্ধু রোড হয়ে আলমবাজার মোড়ে গিয়ে মিছিল শেষ হয়। মিছিলের একেবারে প্রথমে হুড খোলা জিপে ছিল বরাহনগরের বেশ কয়েক বারের বিধায়ক তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর বড় কাটআউট।
তা দেখে আপ্লুত গৌতম বলেন, ‘‘জ্যোতিবাবু চেয়েছিলেন বরাহনগরে শিল্প, কলকারখানা হোক। না হলে কর্মসংস্থান কী ভাবে হবে? আমরাও তা-ই চাই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভোটের প্রচারে মোদী ও মমতা লাগামহীন কথা বলছেন। ওঁদের কথার দিশা বা অভিসন্ধি কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। তাই মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছেন।’’ নতুন প্রজন্ম তাঁদের দিকে এগিয়ে আসায় ফের আশার আলো দেখছেন বলেও জানান পোড়খাওয়া এই সিপিএম নেতা।
দীর্ঘ দিন ধরে গৌতম পার্কিনসন্সে আক্রান্ত। ওই অসুখে তাঁর হাত-পা বেশি নড়াচড়া করার সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কয়েক বছর আগে কেরলে গিয়ে গৌতম চিকিৎসা করান। তখন তাঁর মস্তিষ্কে পেসমেকার বসানো হয়। তাতে অহেতুক হাত নড়াচড়া করার সমস্যা মিটলেও হাঁটাচলায় অসুবিধা ছিল বলে জানাচ্ছেন নারায়ণ। তিনি বলেন, ‘‘মাস আটেক ধরে ওঁর চিকিৎসা করছি। তখন উনি শয্যাশায়ী ছিলেন। স্নায়ুর পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, হাঁপানির সমস্যা ছিল। সে সব নিয়ন্ত্রণ করে, নিয়মিত ফিজ়িয়োথেরাপির পরে আবার হাঁটছেন।’’ গৌতমও বলেন, ‘‘আগামী দিনে মিটিং-মিছিলে আবার আসব।’’