Tarader Katha

তারাদের কথা: রাহুল গান্ধী

Advertisement

শোভন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:২৬
Share:

দাড়িতে দাঁড়ি

Advertisement

একদা তাঁর গাল ছিল চকচকে কামানো। খানিক শিশু-শিশু ভাব। খানিক ছটফটে। খানিক উচাটন। কথায় কথায় কুর্তার হাতা গোটাতেন। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ তাঁর সঙ্গে দাড়ি জুড়ে দিল। ছিলেন ‘রাহুলবাবা’। হয়ে গেলেন পরিণত বয়সের ‘সাদ্দাম হোসেন’! সে যা-ই হোক, দাড়ি এখন তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী। দাড়িতেই দাঁড়ি টেনেছেন। ভোটে না-পেরে মোদীর সঙ্গে কি তিনি দাড়িতে পাল্লা টানতে চান? কিন্তু এ সব দুষ্টু প্রশ্ন না-করাই ভাল।

ট্রাক-ট্র্যাক্টর-কুলি-দোকানদার

Advertisement

বিদেশে ট্রাকে চেপেছেন। দেশে ট্র্যাক্টর চালিয়েছেন। মাথায় সুটকেস চাপিয়ে কুলি হয়েছেন। আপাতত দোকানদারিতে মন দিয়েছেন। ভালবাসার দোকান। সে দোকানের বিক্রিবাটা কেমন? খদ্দের কত হয়? তাঁরা কি ভালবাসা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন? তবে এ সব দুষ্টু প্রশ্ন না-করাই ভাল।

সে আমার ছোট বোন

তিনি এখন তিপ্পান্ন। ছোট বোন প্রিয়ঙ্কা বাহান্ন। যিনি রাজনীতিতে আসছেন-আসছেন করেই কাটিয়ে দিলেন গত বেশ কয়েকটি বছর। প্রতি বার ভোটের আগে শতাব্দীপ্রাচীন কংগ্রেসে রব ওঠে, ‘প্রিয়ঙ্কা লাও! দেশ বচাও!’ তবে কিনা ‘লাও’ তো বটে। কিন্তু আনে কে? তিনি কি আনতে পারেন না? না কি আনতে চান না? তিনি কি চান প্রিয়ঙ্কা ‘আদরের ছোট বোন’ হয়েই থাকুন? যদিও এ সব দুষ্টু প্রশ্ন না-করাই ভাল।

ভদ্রাসন

অমেঠি ছিল তাঁর ‘পারিবারিক সম্পত্তি’। ঘরবাড়ি। ভদ্রাসন যাকে বলে। স্মৃতি ইরানির দাপটে সে বাড়ি গান্ধী পরিবারের হাতছাড়া হয়েছে। রাহুলকেই অমেঠি-হারা (আসলে অমেঠি-ছাড়া) হতে হয়েছে। ভাগ্যিস একই সঙ্গে কেরলের ওয়েনাড়েও লড়েছিলেন! কিন্তু অমেঠির ভবি আবার অত সহজে ভোলে না। অমেঠিকে আবার ‘ভদ্রাসন’ বানানোর জন্য ময়দানে এসে পড়েছেন আক্ষরিক অর্থেই এক ‘ভদ্র’। সেই ভদ্রের আগের শব্দটি ‘রবার্ট’। রাহুলের ভগ্নিপতি বলে বসেছেন, অমেঠির মানুষ তাঁকে চাইছেন! রাহুল কি হাত-পায়ের গুলি-সর্বস্ব রবার্ট ভদ্রকে অমেঠি আসনে কংগ্রেসের হয়ে লড়তে দেবেন? লড়লে তিনি কি জিতবেন? এ সব দুষ্টু প্রশ্ন না-করাই ভাল।

ইন্ডির দেব পিন্ডি চটকে

বিরোধীদের জোট ‘ইন্ডিয়া’ শুরু করেছিলেন লাফঝাঁপ করে। এক পাশে মমতা। অন্য পাশে ইয়েচুরি। মধ্যমণি তিনি। শরিকদের নমনীয় হওয়ার কথা বলেছিলেন। কংগ্রেসকেও সহনশীল হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন জোটের মঞ্চ থেকে। আসন সমঝোতা নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রাতরাশ করলেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা করলেন না! ফলে সর্বপ্রথম সরে গেলেন মমতা। ‘ইন্ডিয়‌া’ নামটি যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত। এখন জোটের যা ছন্নছাড়া অবস্থা, তাতে কেউ কি বলবেন না যে, ইন্ডি জোটের পিন্ডি চটকে গিয়েছে তাঁর জন্যই? তবে কিনা, এ-ও দুষ্টু প্রশ্ন। না-করাই ভাল।

সাদা-সাদা, কালা-কালা

রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে সাদা তিনি। আগে সাদা কুর্তা-পাজামা পরতেন। আর মাঝেমধ্যে গাঢ় নীল বা অন্য কোনও গাঢ় রঙের টি-শার্ট। ইদানীং তাঁর টি-শার্টে সাদা ছাড়া আর কোনও রং দেখা যায় না। কেন শুধু সাদা? যাতে তাঁর সাদার বিপরীতে মোদীকে আরও কালো দেখায়? দুষ্টু-দুষ্টু প্রশ্ন। না-করাই ভাল।

ঝালে-ঝোলে

ঝাল খাবার নিয়ে গোলমালে পড়েছিলেন তেলঙ্গানায়। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র সময় ভারী কষ্ট হয়েছিল ঝাল খাবার খেতে গিয়ে। কিন্তু তার এক বছর পরে যখন তেলঙ্গানায় বিধানসভা ভোটে জিতে সরকার গঠন করল কংগ্রেস? তখনও কি তাঁর তেলঙ্গানার ঝাল খাবার নিয়ে ততটাই অস্বস্তি ছিল? না কি কংগ্রেসের কোলে ঝোল টানায় ঝাল মাফ? দুষ্টু প্রশ্ন নয়! দুষ্টু প্রশ্ন নয়!

খেলাখ্ খেলাখ্ খেলা হবে

জাপানি মার্শাল আর্ট আইকিডোতে ব্ল্যাক বেল্ট। এখনও নাকি নিয়মিত অনুশীলন করেন। ২০১৩ সালে জাপানে গিয়েছিলেন প্রশিক্ষণ নিতে। সেখান থেকেই ব্ল্যাক বেল্ট পান। লোকসভা ভোটে কি মার্শাল আর্টের প্যাঁচ কষতে পারবেন? না কি সেখানে তিনি আবার স্বপ্নালু ভোটবিলাসী? আবার দুষ্টু প্রশ্ন? একেবারে নয়!

অতল জলের আহ্বান

কলেজ থেকেই তাঁর শখের স্পোর্ট ‘স্কুবা ডাইভিং’। একাধিক সার্টিফিকেটও বাগিয়েছেন। ‘সার্টিফায়েড’ স্কুবা প্রশিক্ষকও বটে। আমেরিকার ফ্লরিডায় থাকার সময়ে স্কুবা ডাইভিং শেখাতেন। পেশা হিসেবে নয়। ভালবেসে। ডুবসাঁতারে কংগ্রেসকে কি নিমজ্জমান অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে পারবেন? দুষ্টু প্রশ্ন। অতএব পরিত্যাজ্য।

চাঁদমারি

রাহুল জাতীয় স্তরের বন্দুকবাজ। ১৯৮৯ সালে দিল্লিতে ৩২তম জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ২৫ মিটার রেঞ্জের শ্যুটিংয়ে চতুর্থ হয়েছিলেন। রাজনীতির চাঁদমারিতে কেন তিনি এখনও লক্ষ্যভেদ করতে পারলেন না? দুষ্টু প্রশ্ন করা যায় না।

রেখাচিত্র: সুমন চৌধুরী

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement