মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
জেলায় সোমবার নির্বাচনী প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খড়গ্রামের মঞ্চ থেকে মুর্শিদাবাদ সিল্কের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “জেলার সিল্ক শাড়ির নাম আছে। সেই শাড়িকে দেশের মধ্যে নয়, বিশ্বের মধ্যে এক নম্বরে নিয়ে যাব।”
জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছোট-বড় বহু তাঁত শিল্প এবং শিল্পীরা রয়েছেন। প্রধানত মুর্শিদাবাদ সিল্ক, গরদ, মসলিন, তসরের জন্য এক সময় বিশ্ব জুড়ে নাম ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার। একদা বালুচর নামে পরিচিত ছিল ভাগীরথীর পূর্বপাড়ের এই ছোট্ট জনপদ বর্তমান জিয়াগঞ্জ। এখানকার শিল্পীরা দাবি করেন, এই স্থানের নাম থেকেই ‘বালুচর’ শাড়ির নামকরণ হয়। তবে এই শিল্প বর্তমানে প্রায় বিলুপ্তির পথে যেতে চলেছে। আজ থেকে প্রায় ৮০০ বছর আগে মুর্শিদকুলি খাঁর সময়ে ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে তাঁদের পূর্বপুরুষেরা আসেন। কয়েক দশক আগেও এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় তিনশো পরিবার জিয়াগঞ্জ তাঁতিপাড়ায় বাস করতেন। বর্তমানে হাতে গোনা কিছু পরিবার নিজেদের পূর্বপুরুষের শিল্পকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে রয়েছেন। তাঁতি পাড়ার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ ধরিয়া বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী, আগামী দিনে জেলায় যদি এই শিল্পের প্রসার ঘটে, তা হলে হয়তো বহু শিল্পী আবারও নতুন করে জীবন ফিরে পাবেন।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তাঁত শিল্পী বলেন, “সবটাই ভোটের চমক। বাস্তবে কিছুই মিলবে না। সরকার যদি তাঁত শিল্পীদের নিয়ে অবিলম্বে চিন্তা-ভাবনা শুরু না করে, তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত পরিবারদের অনাহারে মৃত্যুবরণ করতে হবে।”
প্রসেনজিৎ বলেন, “ক্রমাগত রেশম সুতোর দাম বাড়তে থাকায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। তারপর আবার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতি বছর কারিগরদের বেতন বৃদ্ধি করতে হচ্ছে।”