Mohan Bhagwat

সংরক্ষণের সমর্থনে মাঠে সঙ্ঘপ্রধান

ভাগবত-শাহের এক সঙ্গে সংরক্ষণের পক্ষে সাফাই দেওয়ার পরে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, সংরক্ষণ নিয়ে বিজেপি-আরএসএস-কে ব্যাকফুটে ঠেলে দেওয়া গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৩৬
Share:

মোহন ভাগবত। —ফাইল চিত্র।

চলতি লোকসভা নির্বাচনে এই প্রথমবার। বিজেপির ‘রক্ষাকর্তা’ হয়ে মাঠে নামতে হল আরএসএস সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতকে।

Advertisement

বিজেপি-আরএসএস সংবিধান সংশোধন করে সংরক্ষণ তুলে দিতে চায়, তাই লোকসভা নির্বাচনে চারশো আসনে জেতার লক্ষ্য নিয়েছে—কংগ্রেস তথা বিরোধীদের এই প্রচারের মুখে আজ হায়দরাবাদে ভাগবত বলেছেন, “সঙ্ঘ বরাবর নিঃশর্ত ভাবে সংরক্ষণের সমর্থক। কারণ সংবিধান মেনে সংরক্ষণের ব্যবস্থা হয়েছে। যত দিন সামাজিক বৈষম্য থাকবে, তত দিন নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষণ থাকা উচিত থাকা উচিত বলে সঙ্ঘের মত।”

আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও প্রথমে বিবৃতি দিয়ে, তার পরে উত্তরপ্রদেশে গিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, বিজেপি বা মোদী সরকার কোনও ভাবেই তফসিলি জাতি, জনজাতি বা ওবিসিদের জন্য সরকারি চাকরি, শিক্ষায় সংরক্ষণ তুলে দেওয়ার পক্ষে নয়। তাঁর অভিযোগ, ‘রাহুল বাবা’ এ নিয়ে মিথ্যা প্রচার করছেন। শাহ বলেন, “আমি মোদীর গ্যারান্টি দিচ্ছে যে দলিত, আদিবাসী, ওবিসিদের সংরক্ষণ বিজেপি তুলবে না, কাউকে তুলতেও দেবে না।”

Advertisement

ভাগবত-শাহের এক সঙ্গে সংরক্ষণের পক্ষে সাফাই দেওয়ার পরে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, সংরক্ষণ নিয়ে বিজেপি-আরএসএস-কে ব্যাকফুটে ঠেলে দেওয়া গিয়েছে। কারণ, মোদী সরকার চারশোর বেশি আসনে জিতে মোদী-শাহেরা তৃতীয়বার ক্ষমতায় এলে সংবিধান সংশোধন করবে বলে সাধারণ মানুষের মনে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই বিজেপি নেতৃত্ব এখন আর ‘অব কি বার, চারশো পার’ বলে গলা ফাটাচ্ছেন না। তার উপরে জাতগণনার দাবি নিয়ে বিজেপির কাছে কোনও উত্তর ছিল না। কেন বিজেপি জাতগণনা করে ওবিসি-দের জনসংখ্যায় ভাগ অনুযায়ী আসন সংরক্ষণে রাজি নয়, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে মোদী- শাহ পাল্টা অভিযোগ তুলেছিলেন, কংগ্রেস কর্নাটক, তেলঙ্গানায় ওবিসি-দের জন্য সংরক্ষিত আসনের ভাগ মুসলিমদের দিয়ে দিচ্ছে। পাল্টা আক্রমণে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি সংরক্ষণ তুলে দিতে চায়। সেই কারণেই ৪০০ আসনে জিতে সংবিধান সংশোধনের রাস্তা তৈরি করতে চাইছে। সংরক্ষণ তুলে দিতে চায় বলে মোদী সরকার ২০২১-এ জনগণনাও করায়নি। তেলঙ্গানার কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডিও একই দাবি করেছিলেন।

কংগ্রেসের এই আক্রমণের হাতিয়ার হিসেবে নেট-মাধ্যমে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণণের বক্তৃতা ছড়িয়ে পড়ে। কৃষ্ণণ সেখানে জাতপাত ও সংরক্ষণের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন। সরসঙ্ঘচালকের একটি ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়েছিল। আজ ভাগবত সেই ভিডিয়ো ভুয়ো বলে দাবি করেছেন। কৃষ্ণণ জানিয়েছেন, ওই বক্তৃতার সময় তিনি কংগ্রেসেই ছিলেন।

দমনে এক জনসভায় রাহুল বলেন, “আজ আরএসএস প্রধান দাবি করছেন, তিনি সংরক্ষণের পক্ষে। অতীতে তিনিই সংরক্ষণের বিরুদ্ধে বলেছেন। যাঁরা সংরক্ষণের বিরুদ্ধে, সংবিধানের বিরুদ্ধে, তাঁদের সবাইকে বিজেপি দলে নিয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, বিজেপি-আরএসএসের নেতা, মোদীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের মন্তব্য স্পষ্ট বিজেপি সংবিধান সংশোধন করে সংরক্ষণ তুলে দিতে চাইছে। রাহুল বলেন, বিজেপি হল ‘সংরক্ষণ খতম করো’ গ্যাংয়ের আড্ডা আর নরেন্দ্র মোদী তার প্রধান। অমিত শাহ উত্তরপ্রদেশের কাসগঞ্জে প্রচারে গিয়ে পাল্টা জবাবে বলেছেন, ‘রাহুল বাবা’ দেশের আমজনতাকে বিভ্রান্ত করছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement