নির্বাচনী প্রচারে সায়নী ঘোষ, ভাঙড়ে। —নিজস্ব চিত্র।
ভাঙড়ে ভোটের প্রচারে এসে আইএসএফকে একহাত নিলেন যাদবপুর লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী সায়নী ঘোষ। রবিবার ভাঙড় ১ ব্লকের নারায়ণপুর ও প্রাণগঞ্জে কর্মীসভা করেন সায়নী। আইএসএফকে কটাক্ষ করে তৃণমূল প্রার্থী বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনে আপনারা এখানে আইএসএফকে ভোট দিয়েছিলেন। এখন আর সেই প্রার্থীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।” সিএএ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ওরা সিএএ করছে। ওদের প্ল্যানিং এরপর এনআরসি করা। সিপিএম-আইএসএফ সব লুকিয়ে যাবে। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের জন্য বুক চিতিয়ে লড়াই করবে।”
এ দিন কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হন সায়নী। রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা মনে করিয়ে দেন। দলের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা বোঝাতে সায়নী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গত তিন বছর ধরে কখনও গোয়া, ত্রিপুরা, কখনও বাংলাদেশ বা ঝাড়খন্ড সীমান্তেও গিয়েছি। কোথাও মার খেয়েছি, গ্রেফতার হয়েছি। ইডি ডেকে নিয়ে গিয়ে সাড়ে ১১ ঘণ্টা জেরা করেছে। ওদের দেওয়া জল পর্যন্ত খাইনি। খেলা হবে স্লোগান দিয়ে ক্রিমিনাল কেস খেতে হয়েছে।” কর্মী সমর্থকদের অনুরোধে মঞ্চে গান গাইতে দেখা যায় সায়নীকে। পথে তারকা প্রার্থীকে ঘিরে শাঁখ বাজিয়ে, উলুধ্বনি দিতে দেখা যায় এলাকার মহিলাদের।
এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা। তিনি বলেন, “গত বিধানসভা নির্বাচনে আইএসএফ সিপিএমের সঙ্গে জোট করেছিল। সিপিএমের রাজ্য সভাপতি বিমান বসু এখন বলছেন, নওসাদকে চেনেন না। সিপিএম যাদবপুরে প্রার্থী দিয়েছে। আইএসএফও বলছে এখানে প্রার্থী দেবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার যেকোনও আসনে তোমরা দাঁড়াও। তোমাদের জামানত জব্দ করে দেব।”
আইএসএফের জেলা পরিষদ সদস্য রাইনুর হক বলেন, “বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী সম্পর্কে অপপ্রচার করছেন। তিনি কী করেছেন তা এলাকার মানুষ জানেন। ভোট হলেই প্রমাণ হয়ে যাবে মানুষ কাদের সঙ্গে আছেন।” যাদবপুরে প্রার্থী দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আলোচনা চলছে। আশা করছি দু-একদিনের মধ্যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।”
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, “বিমান বসুর কথার অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বিজেপি, তৃণমূলের বিরুদ্ধে অন্যান্য সমস্ত শক্তি এক সঙ্গে লড়াই করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আলোচনা চলছে। আশা করছি একটা সমঝোতা হবে।”
কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সায়নীর বক্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির যাদবপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অবনী মণ্ডল বলেন, “উনি মানুষকে ভুল বোঝাতে এই সব বলছেন। ওরা ১০০ দিনের কাজের টাকার হিসেব দিতে পারেননি। ওরা তো যে কোনও ইস্যুতে কোর্টে যান। এক্ষেত্রেও যেতে পারতেন। কিন্তু হিসেব দিতে পারবেন না, সেই ভয়ে যাননি।”