রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
রাহুল গান্ধী বা প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার মধ্যে কেউই উত্তরপ্রদেশের অমেঠী-রায়বরেলী থেকে প্রার্থী না হলে সমাজবাদী পার্টি চায়, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে উত্তরপ্রদেশের কোনও একটি নিশ্চিত আসন থেকে প্রার্থী হোন।
সমাজবাদী পার্টির মতে, গান্ধী পরিবারের কেউ উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রার্থী না হলে দেশের সবথেকে বড় রাজ্যে ‘ইন্ডিয়া’আগেই হাল ছেড়ে দিয়েছে বলে বার্তা যাবে। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস সভাপতি উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রার্থী হোন। এমনিতেই কংগ্রেসের হিন্দি বলয়ে পাট গুটিয়ে গিয়েছে, কংগ্রেসের যে টুকু শক্তি, তা শুধু দক্ষিণ ভারতে বলে ধারণা তৈরি হয়েছে। খোদ কংগ্রেস সভাপতি উত্তরপ্রদেশ থেকে জিতে লোকসভায় গেলে সেই ধারণা ভুল বলে প্রমাণিত করা যাবে। খড়্গে অবশ্য রাজ্যসভার সাংসদ এবং সেখানে বিরোধী দলনেতা।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত রাহুল ও প্রিয়ঙ্কার মধ্যে কেউই অমেঠী বা রায়বরেলী থেকে প্রার্থী হতে চাইছেন না। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠক বসছে। রাহুল গান্ধী গত লোকসভা ভোটে অমেঠীতে হেরে গিয়েছিলেন। কেরলের ওয়েনাড় থেকে জিতে লোকসভায় যান।
কংগ্রেস ইতিমধ্যেই তাঁর নাম ওয়েনাড়ের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দিয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাহুল গান্ধী আর অমেঠী থেকে লড়তে চাইছেন না। তাঁর মতে, দু’টি আসন লড়ে জেতার পরে একটি আসন ছেড়ে দেওয়া খারাপ বার্তা দেয়।
অন্য দিকে সনিয়া গান্ধীর রায়বরেলী থেকে প্রিয়ঙ্কাও প্রার্থী হতে চান না। সনিয়া রায়বরেলী ছেড়ে দিয়ে রাজ্যসভায় জিতে সাংসদ হয়েছেন। প্রিয়ঙ্কা কংগ্রেস নেতাদের জানিয়েছেন, সনিয়া, রাহুলের সঙ্গে তিনিও প্রার্থী হলে বা জিতে সংসদে গেলে কংগ্রেস থেকে গান্ধী পরিবারেরই তি নজন সাংসদ হয়ে যাবেন। ফলে বিজেপির পক্ষে পরিবারতন্ত্র নিয়ে আঙুল তোলা সহজ হয়ে যাবে। বিজেপি যদিও কটাক্ষ করছে, গত বার রাহুল অমেঠীতে স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যাওয়ার পরে কংগ্রেস এ বার রায়বরেলীতে জয়ের বিষয়েও নিশ্চিত নয়। সেই কারণেই রাহুল-প্রিয়ঙ্কা প্রার্থী হতে চাইছেন না।
গান্ধী পরিবারের অন্য শিবিরের দুই সদস্য, বরুণ গান্ধী ও মেনকা গান্ধীকে এ বার বিজেপি পিলিভিট ও সুলতানপুর থেকে প্রার্থী করবে কি না, তা নিয়ে বিজেপি শিবিরে অঙ্ক কষা চলছে। বিজেপির প্রার্থী তালিকা নিয়েও চলতি সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠক বসবে। মেনকা গত বিশ বছর ধরে বিজেপি সাংসদ। তারও আগে তিনি জনতা দলের টিকিটে বা নির্দল প্রার্থী হিসেবে সাংসদ হয়েছেন। বরুণও ২০০৯ থেকে বিজেপি সাংসদ। কিন্তু কৃষক আন্দোলনের সময় থেকে তিনি একাধিক বিষয়ে মোদী সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এ বার বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। যদিও বরুণ সম্প্রতি সুর নরম করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাজের প্রশংসা করেছেন।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, বিজেপি শেষ পর্যন্ত বরুণকে প্রার্থী না করলে তিনি অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির সমর্থনে নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়াতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আসন সমঝোতার সূত্র মেনে কংগ্রেসেরও বরুণকে সমর্থন করতে হবে। সমাজবাদী পার্টি উত্তরপ্রদেশে আসন সমঝোতায় কংগ্রেসকে ১৭টি আসন ছেড়েছে। তবে অখিলেশের ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, কংগ্রেস সভাপতি খড়্গে উত্তরপ্রদেশ থেকে লড়তে রাজি হলে তাঁরা অন্য কোনও আসন ছেড়ে দিতে পারেন, যেখানে জয়ের
সম্ভাবনা বেশি।