প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির ‘নির্যাতিতা’ মহিলাদের সঙ্গে দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার বারাসতে তাঁর জনসভা ছিল। সেখানেই ভাষণের পর মঞ্চের পিছনে ‘নির্যাতিতা’দের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সেখানকার কোনও ছবি প্রকাশ করা হয়নি।
বিজেপির তরফে দাবি, সন্দেশখালিতে যে সব মহিলারা তৃণমূল নেতাদের ‘নির্যাতনের’ শিকার হয়েছিলেন, তাঁদের কয়েক জন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। মোদী একান্তে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন। ওই সময়ে বিজেপির কোনও নেতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। মোদীর কাছে নালিশ জানান ওই মহিলারা। কথা বলতে বলতে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। বিজেপি জানিয়েছে, এক জন বাবা যেমন সন্তানের কাছে নালিশ শোনেন, তেমন ধৈর্যের সঙ্গে সন্দেশখালির মহিলাদের কথা শুনেছেন মোদী। তাঁদের দুঃখমোচনের আশ্বাস দিয়েছেন।
এর আগে বারাসতের মঞ্চ থেকে রাজ্যের শাসকদলকে আক্রমণ করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার মাটি নারী শক্তির অনেক বড় কেন্দ্র। এখানকার নারী শক্তি দেশকে দিশা দিয়েছে। এই ভূমি মা সারদা, রাণী রাসমণি, বীণা দাস, প্রীতিলতা, কল্পনা দত্ত-সহ অনেক শক্তিরূপিণীকে দিয়েছে। কিন্তু তৃণমূল এই ভূমিতে নারী শক্তিকে অত্যাচার করেছে। মা-বোনদের উপর অত্যাচার করে তৃণমূল ঘোর পাপ করেছে।’’
সন্দেশখালি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে তৃণমূল যা করেছে, তাতে যে কারও মাথা লজ্জায় নুইয়ে যায়। কিন্তু তৃণমূলের কোনও যায়-আসে না। এরা অপরাধীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। প্রথমে হাই কোর্ট, তার পর সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেয়েছে। মা-বোনদের এই রাগ সন্দেশখালিতে সীমাবন্ধ থাকবে না। পুরো রাজ্যে সন্দেশখালির ঝড় উঠবে।’’ মোদী আরও বলেন, ‘‘তৃণমূলের মাফিয়া রাজ শেষ করতে বাংলার নারীশক্তি এগিয়ে এসেছে। সন্দেশখালি দেখিয়ে দিয়েছে, মা-বোনদের আওয়াজ কেবল বিজেপি। তৃণমূল সরকার কখনও এঁদের সুরক্ষা দিতে পারবে না।’’
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের আগে সন্দেশখালির ঘটনাকে শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রচারের অন্যতম প্রধান ইস্যু করে তুলেছে বিজেপি। সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখ-সহ তৃণমূলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে স্থানীয় মহিলাদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গ্রামবাসীদের জমি জবরদখল করে মাছের ভেড়ি তৈরি থেকে শুরু করে কাজ করিয়ে টাকা না দেওয়া, মারধরের মতো অভিযোগ রয়েছে ওই নেতাদের বিরুদ্ধে। শাহজাহান ছাড়া উঠে এসেছে শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারদের মতো নেতাদের নাম। শাহজাহানদের গ্রেফতারির দাবিতে পথে নেমেছিলেন সন্দেশখালির মহিলারা। বেশ কয়েক দিন তাঁদের বিক্ষোভে সন্দেশখালি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল। শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আপাতত তিনি সিআইডি হেফাজতে রয়েছেন। হাই কোর্ট তাঁকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।