—প্রতীকী চিত্র।
‘সাগরদিঘি মডেল’ হয়ে উঠতে না পারলেও ২০২৪ সালের জঙ্গিপুরের লোকসভা নির্বাচনে ভোট লুট, ছাপ্পা ভোট রুখে দিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ব্যাপক সংখ্যায় উপস্থিতি। জঙ্গিপুরের বেশ কিছু অঞ্চলে ভোট লুট ও ছাপ্পা ভোট নতুন কিছু নয়। কিন্তু এ বারে তা বিচ্ছিন্ন ভাবে কোথাও ঘটলেও উল্লেখ করার মতো কিছু নয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর এই ভূমিকায় খুশি কংগ্রেস, তৃণমূল ও সিপিএমও। তবে বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনীর আরও বেশি তৎপরতা দাবি করেছেন। তবে নেতারা অখুশি হলেও এদিন সাধারণ ভোটারেরা সামগ্রিক ভাবে খুশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকায়। লালগোলার ব্যবসায়ী এমাজুদ্দিন শেখ, সাইদাপুরের দেদার বক্সরা বলছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর কারণে বুথে অবাঞ্ছিত প্রবেশ আটকানো গিয়েছে। গত বিধানসভাতেও কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও দেদার ছাপ্পা ঠেকানো যায়নি।’’
এ দিন বুথে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও সাগরদিঘির নির্বাচনের দিনের মতো ঝাঁঝ ছিল না তাদের। আর সেই কারণেই বুথের বাইরে একাধিক জায়গায় এড়ানো যায়নি বিধি ভেঙে জমায়েত। আর তাতেই বেড়েছে অশান্তি। তবে এ দিন নির্বিঘ্নে ভোট করতে চেষ্টার কসুর করেননি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। এ দিন রাজ্য পুলিশের ভূমিকাও ছিল মন্দের ভাল। তারাও বিভিন্ন পথে নাকা চেকিং করেছে, গোলমালের খবর পাওয়া মাত্র ছুটে গিয়েছে ঘটনাস্থলে।
তবুও সাত সকালেই বুথের ৫০ মিটারের মধ্যে মীরেরগ্রামের এক বুথে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ও বিজেপি প্রার্থীর মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে, জঙ্গিপুর পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে বুথের মধ্যে ভোটদান কক্ষের পাশে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে সাহায্যের নামে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। জঙ্গিপুর বিধানসভার খোজারপাড়ায় ২৬৫ নম্বর বুথে আইএসএফ ও তৃণমূলের জমায়েতকে ঘিরে বচসা ও মারধরে দু’জন আহত হয়েছেন, ১ জনের মাথা ফেটেছে। বহু বুথের সামনেই নির্দিষ্ট ব্যবধান মেনে শিবির করার বালাই ছিল না কোনও রাজনৈতিক দলেরই। তবে সাগরদিঘি মডেল দেখা না গেলেও জঙ্গিপুর লোকসভা নির্বাচনে এ বারে বোমা পড়েনি কোথাও, গুলিও চলেনি। ঘটেনি বড় ধরনের কোনও অশান্তি।
সুতি থেকে লালগোলা, সাগরদিঘি থেকে খড়গ্রাম ১৮৫১টি বুথের প্রতিটি বুথেই এ বারে ছিল পর্যাপ্ত সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাই বুথের মধ্যে দেদার ছাপ্পা, বুথ জ্যাম বা ভোটদানে ভোটারদের বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়ার ঘটনা তেমন ভাবে নজরে আসেনি। আসেনি অভিযোগও।
জঙ্গিপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমানের বক্তব্য, ‘‘দু’একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা ছিল।’’ সামগ্রিক ভাবে এদিনের ভোটে খুশি সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য জ্যোতিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “সাগরদিঘি মডেলে না হলেও বুথের মধ্যে ভোট লুঠ বন্ধ করা গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের উপস্থিতিতে। তবে রাজ্য পুলিশের কর্মীরা কাবিলপুরে বিরোধীদের হুমকি দিয়েছে। তবে মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিয়েছেন।’’