(বাঁ দিকে) মহম্মদ সেলিম। ডোমকলের সভায় অধীর চৌধুরী (ডান দিকে)। —গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
মুর্শিদাবাদের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের মনোনয়নের দিন গলায় কাস্তে-হাতুড়ি-তারা আঁকা উত্তরীয় জড়িয়ে নিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শনিবার ডোমকলে সেলিমের সমর্থনে জোটের সভা থেকে সিপিএম প্রার্থীকে জেতাতে কংগ্রেস কর্মীদের দরকারে জীবন দিয়ে দেওয়ার ডাক দিলেন অধীর। সভায় উপস্থিত অনেকের মতে, একটা সময়ে বক্তৃতা শুনে বোঝা যাচ্ছিল না, অধীর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি না কি সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক!
শনিবার ডোমকলের দেশকল্যাণ সঙ্ঘের মাঠের সভায় অধীর বলেন, ‘‘সেলিমভাইকে জেতাতে কংগ্রেস কর্মীদের কর্তব্যে যেন কোনও খামতি না থাকে। দরকারে জান দিয়ে হলেও সেলিমভাইকে জেতাতে হবে। আমিই সেলিমভাইকে বলেছিলাম, মুর্শিদাবাদে দাঁড়ান।’’ পাশাপাশিই অধীর দাবি করেন, মুর্শিদাবাদের তিন কেন্দ্রেই বাম-কংগ্রেস প্রার্থীরা জিতবেন। তাঁর কথায়, ‘‘মুর্শিদাবাদ আমরা (পড়ুন বাম-কংগ্রেস) দখল করে নিয়েছি। আমরা বলেছি, মুর্শিদাবাদে তিনে তিন, তৃণমূলকে কবর দিন।’’
অধীরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘যে সিপিএমের হাতে হাজার হাজার কংগ্রেস কর্মী খুন হয়েছেন, সেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের জন্য অধীরবাবু বলছেন কংগ্রেস কর্মীদের জান দিতে। প্রকৃত কংগ্রেস কর্মীরা কখনওই তা করবেন না।’’
শনিবারের সভায় ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। মুর্শিদাবাদ জেলার তিন লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে দু’টিতে লড়ছে কংগ্রেস, একটিতে সিপিএম। বহরমপুরে লড়ছেন অধীর। পরের দফাতেই ভোটগ্রহণ রয়েছে মুর্শিদাবাদ এবং জঙ্গিপুরে। বহরমপুরে ভোট চতুর্থ দফায়। অধীর শনিবার বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে তৃণমূল ভোট লুট করে জিতেছিল। কিন্তু ঘুঘু বার বার ধান খেয়ে যেতে পারবে না। এ বার কোনও বুথে তৃণমূলকে ভোট লুট করতে দেব না, দেব না, দেব না।’’ অতীতে সাংসদ হিসাবে সংসদে সেলিমের বক্তৃতার তারিফ করে অধীর বলেন, ‘‘আপনারা সেলিমকে জেতান। তার পর সংসদে তাঁর যা ভূমিকা হবে, তা দেখলে আপনাদেরই গর্ব হবে।’’ অধীর ছাড়াও ভাষণ দেন সিপিএম প্রার্থী সেলিম, সিপিএমের জেলা সম্পাদক জ়ামির মোল্লা, প্রবীণ সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আনিসুর রহমান-সহ বাম এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব।