Lok Sabha Election 2024

দিলীপকে দেওয়া চিঠি প্রকাশ্যে আসায় ক্ষোভ

নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ। যা নিয়ে ঘরে-বাইরে জোড়া চাপের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। দলের তরফে তাঁকে চিঠি দিয়ে জবাব তলব করা হয়েছিল।

Advertisement

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪ ০৫:১৬
Share:

দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডার নির্দেশে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহের সই করা সেই চিঠির ছবি সমাজমাধ্যমে কার্যত ‘ভাইরাল’ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু দলের অভ্যন্তরে এক নেতাকে দেওয়া নেতৃত্বের চিঠি কী ভাবে প্রকাশ্যে চলে এল? এই নিয়ে যথেষ্ট ‘ক্ষুব্ধ’ দলের একাংশ। সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে ‘অসন্তুষ্ট’ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘও (আরএসএস)।

Advertisement

নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ। যা নিয়ে ঘরে-বাইরে জোড়া চাপের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। দলের তরফে তাঁকে চিঠি দিয়ে জবাব তলব করা হয়েছিল। চিঠিতে তাঁর মন্তব্যকে ‘অসংসদীয় ও অশোভন’ বলে উল্লেখ করাও হয়েছিল। মন্তব্যের বিরোধিতা করে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানায় তৃণমূল কংগ্রেস। কমিশনও দিলীপকে তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে বলে। দিলীপ কমিশনে চিঠি পাঠিয়ে নিজের বক্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, বিজেপির মতো ‘শৃঙ্খলাবদ্ধ’ রাজনৈতিক দলে একটি অভ্যন্তরীণ চিঠি কী করে সমাজমাধ্যমে চলে এল! দলের মধ্যে দিলীপ ‘সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত। সূত্রের খবর, এই ঘটনা কেন ঘটল, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদকের (সংগঠন) কাছ থেকে সেই ব্যাখ্যা চেয়েছে সঙ্ঘ। তবে রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা, দলে রাজ্য ও কেন্দ্রের পদ হারানো, টিকিট পাওয়া নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানা, কেন্দ্র বদলের মতো ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে দলের অন্দরে যথেষ্ট ‘কোণঠাসা’ ছিলেন দিলীপ। তার উপরে দলের এই চিঠি প্রকাশ্যে চলে আসায় বিজেপির অন্দরে দিলীপের অবস্থানই আরও ‘নড়বড়ে’ হল।

দিলীপ অবশ্য জানায়েছেন, দলের চিঠির কী উত্তর দেবেন, তা প্রকাশ্যে বলবেন না। দলীয় পদ্ধতি মেনেই তার উত্তর দেবেন। চিঠি প্রকাশ্যে আসা নিয়ে দিলীপের বক্তব্য, “কার কাছে চিঠি এসেছিল, কোথা থেকে সেই চিঠি বেরিয়ে গেল, আমি বলতে পারব না। দলেরই বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা উচিত।” তবে দিলীপ মুখ না খুললেও বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক থামছে না। সব মিলিয়ে রাজ্য বিজেপিও দৃশ্যত ‘বিব্রত’। সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ এক বিজেপি নেতার মতে, “এই ধরনের ঘটনা বিজেপির দলীয় রীতির সঙ্গে খাপ খায় না। দলের কর্মীরা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। দলের উচিত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা।”

Advertisement

যদিও বিতর্কে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বিষয়টিকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “এই নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। যা হয়েছে, বরং ভালই হয়েছে! সবাই জানতে পেরেছেন আমাদের দল কী নীতি নিয়ে চলে। তৃণমূল তো আমাদের দলের সর্বভারতীয় সভাপতি, দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করেছে। তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী কোনও দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চেয়েছেন, তিনি কেন এই মন্তব্য করেছেন? চিঠি কেন প্রকাশ্যে এসেছে, এটা আলোচনার বিষয় নয়। আলোচনার বিষয় হওয়া উচিত, দল হিসেবে বিজেপি কী ব্যবস্থা নিয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement