আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবত। —ফাইল ছবি।
আগামী সপ্তাহের গোড়াতেই লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশ হতে চলেছে। গেরুয়া শিবিরের আশা, তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। এই আবহে আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবত জানালেন, ‘প্রকৃত রাজা’ কেমন হওয়া উচিত, তা রাণী অহল্যাবাই হোলকারের জীবন থেকে শেখা উচিত। আজ অহল্যাবাইয়ের ২৯৯তম জন্মদিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, একজন দক্ষ প্রশাসকের পাশাপাশি তিনি যে শিল্পনীতি নিয়েছিলেন, তা শুধু তাঁর সময়ের প্রজাদের নয়, আজও মানুষকে রোজগারের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। পাশাপাশি সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে নিয়ে চলার যে নীতি তিনি নিয়েছিলেন, তা-ও দৃষ্টান্তমূলক বলে দাবি করেন ভাগবত।
আজ সঙ্ঘ প্রধান যে ভাবে রাজার কর্তব্য সম্পর্কে মুখ খুললেন, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে যে ভাবে রোজগার সৃষ্টির পিছনে অহল্যাবাইয়ের ভূমিকার তিনি প্রশংসা করেন, তা দেখে অনেকেই মনে করছেন, ওই কথা বলে তিনি সম্ভবত বিশেষ কাউকে বার্তা দিতে চেয়েছেন। কারণ গত দশ বছরে মোদী সরকার যে ক্ষেত্রটিতে সবচেয়ে বেশি সমালোচনার শিকার হয়েছে, তা হল রোজগার তৈরির ক্ষেত্রে ব্যর্থতা। মোদীর সময়েই দেশে বেকারত্বের হার গত চার দশকে সর্ব্বোচ্চ হয়েছে। যে কারণে যুব সমাজের একটি বড় অংশ বিজেপির থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। অর্থনীতির বেহাল দশা, বেকারত্ব যে হিন্দু ভোট ব্যাঙ্কের ভিতে সিঁদ কাটছে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন সঙ্ঘ নেতারাও। তাই সম্ভবত আজ নিজের বক্তব্যে রোজগার সৃষ্টির বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন ভাগবত। যাতে আগামী দিনে রোজগার তৈরির ক্ষেত্রে জোর দেন বর্তমান শাসকেরা। ভাগবত বলেন, ‘‘অহল্যাবাইয়ের শিল্পীনীতির ফলে প্রজাদের রোজগারের সুযোগ তৈরি হয়েছিল।’’ পাশাপাশি প্রশাসক হিসাবে অহল্যাবাইয়ের দূরদৃষ্টির প্রশংসা করে সঙ্ঘপ্রধান বলেন, ‘‘অহল্যাবাইয়ের দূরদর্শী শিল্পনীতির ফলে মহেশ্বর এলাকায় বস্ত্র শিল্প আজও রোজগার জুগিয়ে চলেছে।’’ তাঁর মতে, দক্ষ প্রশাসকের এটি সবচেয়ে বড় সাফল্য।
পাশাপাশি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বরাবরই বিভাজনের রাজনীতি করার অভিযোগ উঠেছে। কখনও সেই বিভাজন ধর্মভিত্তিক, কখনও জাতভিত্তিক। কিন্তু অহল্যাবাইয়ের শাসনে সমাজের সব শ্রেণি সমান গুরুত্ব পেয়ে এসেছে বলে দাবি করেন ভাগবত। কৃষকদের উন্নয়নও অহল্যাবাইয়ের শাসনে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে বলে আজ মন্তব্য করেন ভাগবত। গত দশ বছরে দু’বার কৃষক বিক্ষোভের সাক্ষী থেকেছে দেশ। এ বারের লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্তে দীর্ঘ সময় ধরে বসেছিলেন কৃষকেরা। মোদী সরকার ক্ষমতায় এসেই কৃষকদের আয় দ্বিগুণ, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য প্রদানের কথা বললেও আদতে কোনও কিছুই করে উঠতে পারেনি। উল্টে সরকারের দমন নীতি অস্বস্তিতে ফেলে দেয় সঙ্ঘ পরিবারকে।