মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় অনুপস্থিত বিধায়ক উষারানি মণ্ডল। তৃণমূল নেতা খালেক মোল্লার সঙ্গে দ্বন্দ্বই কারণ। ফাইল ছবি।
মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় হাজির হননি দু’জনেই। সেটা দেখেই মিনাখাঁর তৃণমূল বিধায়ক উষারানি মণ্ডল এবং তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার হাড়োয়ায় হাজি নুরুল ইসলামের সমর্থনে আয়োজিত জনসভা থেকে তীব্র আক্রমণ করেন দলীয় বিধায়ককে। বসিরহাট তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিধায়কের অনুপস্থিতির আড়ালে রয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া।
বিধায়ক উষারানি ও তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয় আদি তৃণমূল বলেই পরিচিত। সেই সুবাদেই ২০১১ সাল থেকে মিনাখাঁ কেন্দ্র থেকে বিধায়ক তিনিই। আর স্বামী মৃত্যুঞ্জয় বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের দলনেতা। বছর তিনেক ধরেই মিনাখাঁর নেতা খালেক মোল্লার গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের বিবাদ। খালেক বর্তমানে হাঁড়োয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি। সঙ্গে হাঁড়োয়া-২ ব্লকের যুব সভাপতি। মিনাখাঁ এলাকায় কোন গোষ্ঠীর প্রতাপ বেশি, তা নিয়ে প্রায়শই দ্বন্দ্বের কথা শোনা যায় শাসকদলে। ব্লক সভাপতি নিয়োগ নিয়ে সেই দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছিল। খালেক গোষ্ঠীর সভাপতি হওয়ার দৌড়ে ছিলেন ফরিদ জমাদার। আর বিধায়ক শিবির থেকে দলের কাছে সিরাজুল ইসলামের নাম জমা পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত ফরিদের নামেই সিলমোহর দেন দলের জেলা নেতৃত্ব। সেই থেকেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম আকার নেয়।
বিধায়ক শিবিরের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর জনসভার আয়োজন থেকে খালেক গোষ্ঠী পুরোপুরি তাদের ছেঁটে ফেলেছিল। এমনকি, কোনও দায়িত্বও দেওয়া হয়নি। তাই অপমানিত হয়েই মমতার সভায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন উষারানি ও তাঁর স্বামী। সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের এমএলএ থাকবেন কিন্তু মিটিংয়ে আসবেন না, তা চলবে না। যত ক্ষণ ক্ষমা চেয়ে পায়ে না ধরবে, তত ক্ষণ উষারানি মণ্ডলকে আমরা মানি না, মানি না, মানি না। ওঁর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। আপনাদের মতো লোক চাই না। আপনি স্বামীকে নিয়ে দলটাকে বেচে দেবেন? এটা মানব না।’’ মমতার এমন ঘোষণার পর তিনি কী করবেন, জানতে বিধায়ককে ফোন করা হলে তা সুইচড অফ থেকেছে।