মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে এসে সন্দেশখালি কাণ্ডের উল্লেখ করে আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে রবিবার ভোট-প্রচারে সুর চড়িয়েছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং শিলিগুড়ির সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘‘নামই মমতা, স্বভাবে মমত্ব নেই।’’ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, সোমবার উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার প্রচার-সভা থেকে রাজনাথকে পাল্টা বিঁধলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেত্রী।
মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির সভা থেকে রাজনাথ বলেছিলেন, ‘‘এক বার আমাদের ভোটে জেতান, তার পরে দেখছি, কে, কতটা মায়ের দুধ খেয়েছে, যে সন্দেশখালির মতো ঘটনা ঘটাতে পারে।’’ এ দিন বক্তব্যের গোড়ার দিকে মমতা বলেন, ‘‘রাজনাথ মুর্শিদাবাদে প্রচারে এসে আমার নামে উস্কানিমূলক ভাষা প্রয়োগ করেছেন। বাংলার মানুষ এমন ভাষা প্রয়োগ তা মেনে নেবেন না।’’ তার পরেই তাঁর তোপ, ‘‘রাজনাথ সিংহকে বলব, আমার মুখ বেশি খোলাবেন না। মু্র্শিদাবাদের অনেক ঘটনা আমি জানি।’’
কোন ঘটনার কথা বলছেন তৃণমূল নেত্রী? তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা উত্তর দিনাজপুরের নেতা অসীম ঘোষের দাবি, ‘‘বিজেপি সীমান্তে বিএসএফ-কে ঠিক মতো কাজ করতে দেয় না। দলনেত্রীর কাছে রিপোর্ট আছে।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের বক্তব্য, ‘‘দলনেত্রী ধীরে ধীরে তথ্য সামনে আনবেন।’’ মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল সূত্রের আবার দাবি, রাজনাথ সিংহ যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, তখন মুর্শিদাবাদের সীমান্ত দিয়ে গরু-পাচারের ক্ষেত্রে অনেকের সঙ্গে তাঁর ছেলের দিকেও অভিযোগের আঙুল উঠেছিল। দলনেত্রীর ইঙ্গিত হয়তো ‘সে দিকে’।
মোদী-শাসনের প্রথম দিকে রাজনাথ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকলেও, পরে যান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে। রাজনাথকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘‘আপনাকে বলব, আগে নিজের গদিটা বাঁচান। তার পরে আমাদের এখানে এসে দালালি করবেন বিজেপির। আপনার জন্যই অত্যাচারী মোদী আজ ভারতবর্ষের গদিতে বসে আছেন।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি তো আপনাকেই পাত্তা দেয় না। আপনি কতটা আদর, সমাদর পান দলে?’’ রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কাউকেই আক্রমণ করতে বাদ দেন না। প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করছেন, রাজনাথ সিংহকে তো করবেনই। হারের হতাশা থেকে এ সব বলছেন। কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা কিংবা কড়া ভাষায় কথা বলা রাজনাথ সিংহের স্বভাব নয়।’’