মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
তমলুকের সভায় বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে বিচারালয়ের কলঙ্ক বলে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি এসএসসির ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। এই মামলায় প্রথম চাকরি বাতিল করেছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎই। সেই প্রসঙ্গেই কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আপনি বিচারপতির আসনে বসে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। নিজেই সে কথা বলেছেন। আপনি বিচারালয়ের কলঙ্ক। আপনি আমাকে পদত্যাগ করার কথা বলছেন। শুনুন আমাক পদত্যাগ করার কথা বলার আগে আপি দেহত্যাগ করুন। আগে নিজের লজ্জা ঢাকুন।’’
তমলুকে দাঁড়িয়ে নাম না করে শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ করলেন মমতা বললেন, ‘‘চ্যালেঞ্জ করছি, অ্যাই গদ্দার, যদি তোর ক্ষমতা থাকে তবে চারটে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বল।’’
কথা দিয়ে কথা রাখেনি বিজেপি। তবে কেন ওদের ভোট দেবেন? প্রশ্ন মমতার। বললেন, ‘‘১৫ লক্ষ টাকা দেবে বলেছিল, দেয়নি, বেকারদের চাকরি দেবে বলেছিল, দেয়নি। উল্টে চাকরি খেয়েছে। এই গদ্দাররা গিয়ে ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে।’’
প্রাক্তন বিচারপতিকে আক্রমণ মমতার। বললেন, আমাকে পদত্যাগ করতে বলার আগে নিজে দেহত্যাগ করুন! আগে নিজের লজ্জা ঢাকুন। আপনি বিচারালয়ের কলঙ্ক।
অধিকারী পরিবারের সম্পত্তির হিসাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ওঁকে জিজ্ঞাসা করুন হলদিয়ায় কী কী আছে ওর? নন্দীগ্রামে কী কী রয়েছে? ক’টা পেট্রোল পাম্প? সব জিজ্ঞাসা করুন। জিজ্ঞাসা করুন, টাকা কখনও নেয়নি? কিন্তু উত্তর পাবেন না।
মমতা বললেন, ‘‘এখানে যিনি বিজেপি প্রার্থী তিনিই প্রথম সই করেছিলেন চাকরি যাওয়ার কাগজে। উনি বিচারকের আসনে বসে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। নিজেই বলেছিলেন যোগাযোগ রাখতেন। তো এঁকে আমি কী বলব, যিনি বিচারকের আসনে বসে বিজেপি করতেন! তাকে বিতাড়িত করে দিন। আর তার নামটাও ঠিক করে দিন।’’
কংগ্রেস যখন করতাম, ও তিন বার দাঁড়িয়েছে, প্রতিবার আমি এসেছি। ও গোহারা হেরেছে। নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ মমতার।
মমতা বললেন, ‘‘বাবা মন্ত্রী হবে বলে ওর গুস্সা হয়েছিল। বাবা মন্ত্রীর শপথ নিলেও তাই ও সেখানে যায়নি। এঁদের কাছ থেকে শিক্ষা নেব?’’
অধিকারী পরিবারকে নাম না করে আক্রমণ মমতার। বললেন, “এক বার কথাচ্ছলেই বলেছিলাম, ‘হ্যাঁ রে আমাদের সরকার না থাকলে দিঘায় আমাদের ঢুকতে দেবে তো? আমি ভাবছি দিঘায় একটা বাড়ি বানাব।’ শুনে বাবু রেগেমেগে গাড়ি থেকে নেমে গেল। আমি ছিলাম, ও ছিল, আর এক সাংবাদিক ছিল সে দিন গাড়িতে।’’
মমতা বললেন, ‘‘হ্যাঁ, আমি ওদের কথা বইয়ে লিখেছিলাম, ভুল লিখেছিলাম, নিজেদের লোকের নাম করব না? তাই লিখেছিলাম। এখন সংশোধন করে দেব। কারণ আমি ১০ দিন ওখানে পড়েছিলাম। পিতা-পুত্র কেউ বাইরে বেরোয়নি। কোথাও ছিল না।’’
মমতা বললেন, ‘‘নন্দীগ্রামে যখন গিয়েছিলাম, সে দিন ওই পিতা-পুত্র কেউ ছিল না। কেউ আসেনি। নন্দীগ্রামের স্মৃতিচারণা করেই চলেছেন মমতা। বললেন, সারারাত বোমা-গুলির আওয়াজ শুনেছিলাম। তখনও কিন্তু কেউ আসেননি। চিত্ত মাইতি আমাকে থাকতে দিয়েছিল।’’
মমতা বলছেন, ‘‘নন্দীগ্রামে যখন গুলি চলেছিল, সিপিএমের গুন্ডারা মদ খেয়ে কোলাঘাটে আটকে দিয়েছিল। আমার গাড়িতে পেট্রল বোমা মারার চক্রান্ত হয়েছিল। আনিসুরকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। আনিসুর পাঁশকুড়ার ছেলে। যে এখন জেলে আছে এখানকার গদ্দারটার জন্য। সে দিন যখন কেউ ছিল না, আনিসুরকে বলেছিলাম, আমাকে পৌঁছতে দেবে না, কী করে পৌঁছই বল তো! সে দিন আনিসুরের বাইকে তমলুক পর্যন্ত এসেছিলাম।’’
গরমে সাত দফা ভোট করানোর জন্য মঞ্চে নির্বাচন কমিশনকে দুষছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘মেদিনীপুরের রোদে দাঁড়িয়ে এক বার দেখুন।’’