Mamata Banerjee on Banglar Bari

১১ লক্ষ ‘বাংলার বাড়ি’র টাকা এ বছরের মধ্যেই দেব, ময়নাগুড়ির মঞ্চ থেকে আশ্বাস মমতার

কী ভাবে কমিশনের বাধা সত্ত্বেও এই টাকা দেবেন তিনি? মমতা বলেছেন, ‘‘ডিজাস্টারে একটা নতুন রুল আগস্ট মাসে হয়েছে। আমি দেখে নিয়েছি। সেই নিয়মেই আপনারা টাকা পাবেন। কেউ বঞ্চিত থাকবেন না।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৪৮
Share:

ময়নাগুড়ির সভামঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।

ডিসেম্বরের মধ্যেই ১১ লক্ষ বাংলার মানুষ নিজের বাড়ি বানানোর টাকা পাবেন। আর সেই টাকা দেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। জলপাইগুড়ির প্রচারমঞ্চ থেকে এমনই ঘোষণা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গের ঝড়ে কয়েক সপ্তাহ আগেই ভেঙে গিয়েছে বহু ঘরবাড়ি। আশ্রয় হারিয়েছেন মানুষ। এই সমস্ত ঝড়দুর্গতকে অর্থসাহায্য দেওয়া নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কমিশনের টানাপড়েনও চলছে। এমন পরিস্থিতিতেই এই ঘোষণা করলেন মমতা। তিনি বললেন, ‘‘আমি কথা দিচ্ছি ১১ লক্ষ মানুষের আবাসন এই বছরেই আমরা করব।’’

Advertisement

জলপাইগুড়িতে মিনি টর্নেডোর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল বহু এলাকা। তার মধ্যে ময়নাগুড়িও ছিল। মঙ্গলবার সেই ময়নাগুড়িতই ভোটের প্রচারে এসেছিলেন মমতা। সেখানেই আবাস যোজনার টাকা না পাওয়া এবং ঝড়দুর্গতদের টাকা দিতে কমিশনের বাধা নিয়ে কথা বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনারা জানেন, ভোট না হলে আমার কাছে এক সেকেন্ডের ব্যাপার ছিল। কিন্তু ভোট চললে আমরা অনেক কিছু করতে পারি না। কারণ, বিজেপির কমিশন বসে আছে। আমরা ওদের লিখেছিলাম বারবার। যাঁদের বাড়ি ঘর ভেঙে গিয়েছে, তাঁদের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হোক। যাতে তাঁরা তাঁদের বাংলার বাড়ি পান। কিন্তু কমিশন বলল, ‘না। যা প্রচলিত নিয়ম আছে, তাতেই হবে’।’’ উল্লেখ্য, এই নিয়ম অনুযায়ী ইতিমধ্যেই ঝড় দুর্গতদের হাতে টাকা পৌঁছে গিয়েছে। কত টাকা পৌঁছেছে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মমতা। জানিয়েছেন, কমিশনের উল্লেখ করা নিয়মে আসলে কী আছে!

মমতার কথায়, ‘‘ওই নিয়ম অনুযায়ী যাঁদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে, তাঁরা ২০ হাজার পাবেন। যাঁদের আংশিক ভেঙে গিয়েছে, তাঁরা পাঁচ হাজার পাবেন।’’ তবে এই অর্থে যে কারও বাড়ি বানানো সম্ভব নয়, সে কথাও বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘একটা বাড়ির উপর দিয়ে ঝড় চলে যাওয়া মানে সে বাড়ি উপড়ে ফেলার মতোই অবস্থা। আমি কথা দিচ্ছি, ১১ লক্ষ মানুষের আবাসন এই বছরেই আমরা করব। ডিসেম্বরের আগে তার টাকা রিলিজ় করব। প্রথম কিস্তি। তার মধ্যে আপনাদের বাড়িগুলোও থাকবে। বাড়িটা ভাল করে তৈরি করে নেবেন।’’

Advertisement

কী ভাবে কমিশনের বাধা সত্ত্বেও এই টাকা দেবেন তিনি? মমতা বলেছেন, ‘‘ডিজাস্টারে একটা নতুন রুল আগস্ট মাসে হয়েছে। আমি দেখে নিয়েছি। তাতে ২০ হাজার যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদের পরে প্রশাসন ৪০ দেবে। তার পর বিল পাশ হয়ে গেলে দ্বিতীয় কিস্তিতে আরও ৬০ হাজার পাবেন। তাই ২০ হাজার টাকা যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদের কেউ বঞ্চিত হবেন না। মনে রাখবেন, যাঁদের বাড়ি সত্যিই সবটা ভেঙেছে, তাঁরা বাংলার বাড়ির জন্য টাকা পাবেন। যাঁদের আংশিক ভেঙেছে, যাঁরা কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ হাজার পেয়েছেন, আপনাদের বাড়ির জন্যও ‘বাংলার বাড়ি’তে বরাদ্দ থাকবে।’’

তবে উত্তরবঙ্গে এই ঘোষণার পাশাপাশি কিছুটা অভিমানও ঝড়ে পড়েছে মমতার কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের মানুষেরা, জঙ্গলমহলের মানুষেরা মাঝে মাঝেই বিজেপিকে ভোট দিয়ে দিচ্ছেন, ফলে বিজেপি টাকা বন্ধ করে দিচ্ছে। আপনারা বলুন তো, কে এখানে আগে আসত? কোন সরকার ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গলমহল হেসেছে? কী পাননি আপনারা! সব দিয়েছি তো।’’

মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গে মমতা ‘বাংলার বাড়ি’র টাকা দেওয়ার কথা সবিস্তার বললেও এর আগে আবাসের টাকা নিয়ে ঘোষণা করেছিলেন অভিষেকও। ঘাটালে তৃণমূলের লোকসভা প্রার্থী দেবের সমর্থনে প্রচারে গিয়ে অভিষক বলেছিলেন, বাংলার মানুষ যেখানে যেখানে তৃণমূলের হাত শক্ত করবে, সেখানে সেখানে আবাসের টাকার প্রথম কিস্তি পৌঁছে যাবে ডিসেম্বরের মধ্যেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement