অধীর রঞ্জন চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
পঁচিশ বছরের সাংসদ অধীর চৌধুরী ভোটের ময়দানে নবীন তৃণমূলের ইউসুফ পাঠানের কাছে পরাজিত হয়েছেন। কী করে এমন হল, তা নিয়ে এখনও জল্পনা চলছে শহরের আনাচে কানাচে।
এবারে বহরমপুরে নির্বিঘ্নে ভোট হয়েছে। যা দেখে অধীর যেমন ভোটের পরে বলেছিলেন তিনি জয়ী হবেন। তেমনই তাঁর দলের নেতাকর্মীরাও ভেবেছিলেন জয়ী হবেন। কিন্তু দীর্ঘ দিনের পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ অধীর কেন তাঁর গড় রক্ষা করতে পারলেন না, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। রাজনৈতিক কারবারিরা বলছেন ২০১৬ সালের পর থেকে কংগ্রেসের গড় মুর্শিদাবাদে তৃণমূল থাবা বসাতে শুরু করেছিল। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তাঁরা জেলা পরিষদ সহ অধিকাংশ ত্রিস্তর পঞ্চায়েত দখল করেছিল। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে জেলার দু’টি লোকসভা আসনে জয়ী হওয়ার পাশাপাশি বহরমপুর কেন্দ্রে অধীরকে জোর ধাক্কা দিতে পেরেছিল। যেখানে বরাবরই অধীর তিন লক্ষের উপরে ভোটে জয়ী হতেন সেখানে উনিশের নির্বাচনে ৮০ হাজার ৬৯৬ ভোট জয়ী হন। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য থেকে বাম-কংগ্রেস কার্যত শূন্য হয়ে যায়। বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার মধ্যে বহরমপুর বিধানসভায় জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির সুব্রত মৈত্র। বাকি ছয়টি বিধানসভায় জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থীরা। তেমনই বিজেপিরও ভোট বৃদ্ধি হয়। যার জেরে বহরমপুর কেন্দ্রে ভোটের নতুন সমীকরণ তৈরি হয়।
বরাবরই বিজেপির বহরমপুর কেন্দ্রে দুর্বল প্রার্থী থাকলেও এবারে জনপ্রিয় চিকিৎসক নির্মল সাহাকে প্রার্থী করে বহরমপুর দখলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। যার জেরে বিজেপিরও অনেক ভোট বৃদ্ধি হয়েছে। যা তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পথ সুগম করতে সাহায্য করেছে। আবার লক্ষ্মীর ভান্ডার সহ নানা জনমোহিনী প্রকল্পের প্রভাব পড়েছে ভোটারদের উপরে। অনেকেই বলছেন বিজেপি এ বারে লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর কেন্দ্রে তাঁদের ভোট বাড়িয়ে অধীরের দিল্লি যাত্রা ভঙ্গ করেছেন। অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘‘ভোট ঠিকঠাক হয়েছিল। আমাদের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। নির্বাচন মানুষের মতামতের উপর নির্ভর করে। কোনও অভিযোগ নেই।’’