—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যে বিপর্যয়ের মধ্যে মুখ রক্ষা করেছে জেলা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুর গেরুয়া শিবিরের শুধু মুখ রক্ষাই করেনি, এই জেলার প্রায় সবক’টি বিধানসভাতেই এগিয়ে থেকে নিজেদের দাপট দেখিয়েছে বিজেপি। ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে এই ফলাফল ধরে রেখে ব্যবধান বৃদ্ধিতে এখন থেকেই বিরোধী দলনেতার জেলায় সক্রিয় হচ্ছে বিজেপি।
মঙ্গলবার লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণা হয়েছে। তমলুক আসনে প্রায় ৭৮ হাজার এবং কাঁথিতে প্রায় ৪ট হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজেপি জিতেছে। কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার মধ্যে ছ'টিতে এগিয়ে বিজেপি। আর তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভাতেই এগিয়ে পদ্ম শিবির। বিজেপি রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির রামনগর, মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীর পূর্ব পাঁশকুড়া এবং তৃণমূলের তমলুক লোকসভা নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রের তমলুক বিধানসভা এলাকাতেও ভাল ফল করেছে। শুধু তাই নয়, ঘাটাল লোকসভার অন্তর্গত পাঁশকুড়া পশ্চিম এবং মেদিনীপুর লোকসভার লোকসভার এগরাতেও বিজেপি তৃণমূলের থেকে এগিয়ে।
সব মিলিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ১৬টি বিধানসভা রয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে ন’টি আসন পেয়েছিল শাসক দল। আর সাতটিতে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। এবার পটাশপুর ব্যতীত ১৫টি বিধানসভায় গিয়েছে বিজেপির পক্ষে।
বছর দু’য়েকের মধ্যে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। হাতে খানিকটা সময় থাকলেও লোকসভা ভোটের এই ফলাফলের পরিবর্তন যাতে না হয়, সে জন্য শীঘ্রই বিজেপি নেতৃত্ব উদ্যোগী হতে চাইছেন। বিজেপি সূত্রের খবর, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর জেলায় অধিক সংখ্যক বিধায়ক নির্বাচিত করার লক্ষ্যমাত্রা নিচ্ছে তারা। ভগবানপুর, পাঁশকুড়া পশ্চিম, চণ্ডীপুর, উত্তর কাঁথি বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের তুলনায় সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ওই সব এলাকায় ব্যবধান বৃদ্ধি করার লক্ষ্য নিচ্ছে তারা।
বিজেপি সূত্রের খবর, বুথ স্বশক্তিকরণ কর্মসূচিতে গোটা রাজ্যের নিরিখে পূর্ব মেদিনীপুরে এগিয়ে তারা। সেই সাংগঠনিক শক্তিকে আরও মজবুত করতে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব বঠকে বসতে চলেছে। বিজেপির জেলা (কাঁথি) সভাপতি অরূপ কুমার দাস বলছেন, ‘‘আমাদের যা সাংগঠনিক শক্তি, তাতে সব আসনেই আমরা জয়ী হতে পারব। যে কয়েকটি বিধানসভায় ব্যবধান সামান্য কমেছে, সেখানের বিষয়ে পর্যালোচনা করতে শীঘ্র বৈঠক ডাকা হচ্ছে। ওই এলাকায় বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে বিধানসভা ভোটে আরও ভাল ফলের জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিচ্ছি।’’ যদিও তৃণমূলের জেলা (কাঁথি) সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা বলেন, ‘‘এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী বিধানসভা ভোটে আমরা ভাল ফল করব।’’
এদিকে, লোকসভা ভোটে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের বিপুল জয়ের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর ‘কাঁটা’ হওয়ায় রাজ্য নেতৃত্ব ক্ষুদ্ধ। আপাতত রাজ্য নেতৃত্বে তমলুক এবং কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতিদের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন। সেই মতো জেলা সভাপতিরা দলের ব্লক সভাপতিদের কাছ থেকে বুথ ও পঞ্চায়েত ভিত্তিক রিপোর্ট চেয়েছেন। বৃহস্পতিবার তমলুকে নিজের বিধায়ক কার্যালয়ে বিধানসভা এলাকার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন সৌমেন মহাপাত্র। তৃণমূলের জেলা (তমলুক) সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্ব ভোটের ফলাফল নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন। আমরাও পঞ্চায়েত ও ব্লক নেতৃত্বদের কাছে কারণ জানতে চেয়েছি।’’