—ফাইল চিত্র।
হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে মমতা বললেন, রচনার চিহ্ন ইভিএমে তিন নম্বরে থাকবে। তিন নম্বরে ভোট দিন, বিজেপিকে বিদায় দিন। ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে’ দিয়ে সভা শুরু করেছিলেন। সেই গানেই সভা শেষ করলেন মমতা।
বিশ্বকপি রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনে সভা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কথায় কথায় ঘুরে ফিরে এল রবি ঠাকুরের গান-কবিতা। কখনও বললেন, ‘‘তুমি কি কেবলই ছবি। শুধু পটে লিখা। ওই যে সুদূর নীহারিকা।’’ কখনও বললেন, ‘‘জীর্ণ পুরাতন, যাক ভেসে যাক, ... ভাঙো বাঁধ ভেঙে দাও’’, তার পর কথা বদলে নিয়ে বললেন, ‘‘বিজেপিকে ভাঙো আর ভাঙনের নয়, জীবনের জয়গান গাও।’’
মমতা বললেন, ‘‘আমাকে যেমন সহজ মনে হয়, আমি ততটা সহজ নয়। একটা কেউ ভুলভাল কাজ করলে আমি দুটো থাপ্পড়ও মেরে দিই। মানুষের জন্য আমি সহজ। অন্যায় করলে সহজ নয়। তাদের জন্য আমি খুব রাফ অ্যান্ড টাফ।’’
২৬ হাজার স্কুলের নিয়োগ আপাতত বহাল রাখার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে মমতা বললেন, ‘‘এত দিন মনখারাপ থাকত। কিন্তু কালকের পর মন আনন্দে ভরে গিয়েছে। আপনি কাজ করার পর তার ফল পেলে আনন্দ হয় তো? আমারও তাই হয়েছে।’’
মমতা প্রশ্ন করলেন, ‘‘আপনাদের বিনা পয়সায় রান্নার গ্যাস দেবে। পেয়েছেন? পাননি। অথচ টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে। আমি বিনা পয়সার গ্যাস পেয়েছি। তাই ভোট পদ্মফুলে দেব। পুরো মিথ্যা কথা।’’
মমতা বললেন, ‘‘ছোটবেলায় হিন্দি গান শুনেছিলাম, ‘ছ্যা ছ্যা ছ্যা কেয়া শরম কি বাত’! এ কী লজ্জার কথা প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা কথা বলেন, এটা মনের ব্যথা। ভদ্র ভাবে বললাম। আর কী বলব! বলেছে, ‘রেশনের টাকা দিই’। মিথ্যা কথা। একটা পয়সা দেয় না। পুরোটাই মিথ্যা কথা, মিথ্যা কথা।’’
দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের কথা জানিয়ে মমতা বললেন, ‘‘আমি অসম্পূর্ণ কাজ করি না। ঠাকুরের মূর্তি এসে গেলেও না। পুরীর বিগ্রহ নিমকাঠে তৈরি হয়। আমি অবশ্য রাজস্থান থেকে মার্বেলের মূর্তি নিয়ে এসেছি। কিন্তু কাজ শেষ হলে তবেই আপনারা দেখতে পারবেন।’’ রাজ্যে কী কী মন্দিরের কাজ করেছেন তা-ও জানালেন মমতা। বললেন, ‘‘কালীঘাটের মন্দিরে কী কাজ হচ্ছে গিয়ে দেখে আসুন।’’
মমতা বললেন, ‘‘ডানলপ এবং যে সব কোম্পানি বন্ধ আছে, ২০১৬ সালে আমরা বিল পাশ করে বলেছিলাম, ডানলপ আর অন্য সংস্থাগুলি আমাদের হাতে দিন। আমরা চালাব। কিন্তু ওরা দেয়নি। দেবে কী করে? ওর মাথায় যে বসে আছে সে বিজেপির এক নম্বর লোক। যাঁরা বেতন পান না, তাঁদের প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে দিই। স্বাস্থ্য সুরক্ষারও খেয়াল রাখা হয়। ’’
মন্ত্রী বেচারাম মান্নার পুত্র বোর্ডের পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেয়েছেন। মমতা সে কথা জানিয়ে বললেন, ‘‘বেচার কাছে আমার মিষ্টি পাওনা আছে। এখন আর বেশি বলছি না। তবে পরে বলব। ’’
নারকেল গাছের রস থেকে চিনি হয় হুগলিতে, জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ-ও বললেন, ‘‘ওটা কম চিনি। যাঁরা বেশি চিনি খেতে পারে না তাঁরাও খেতে পারবেন।’’
‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে’ আবৃত্তি করে সভা শুরু মমতার। বললেন, ‘‘রচনাকে এখানে প্রার্থী করেছি তার কারণ হুগলিতে যিনি বিজেপি প্রার্থী তিনি অনেকের গলার লকেট। খারাপ ভাবে বলছি না।’’