—প্রতীকী ছবি।
লোকসভা নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি চালু হওয়ার পরেই সব স্কুল চত্বর থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে রাজনৈতিক ব্যানার, পতাকা। কোনও ফলক, ব্যানার বা অন্য কিছুতে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের নাম-ছবি থাকলে ঢাকতে হবে সেগুলিও। ভোটের বুথ হোক বা না হোক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক— সব স্কুলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য এই নিয়ম। শনিবার লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগেই কিন্তু এই সংক্রান্ত নির্দেশ জারি করে ঝাড়গ্রাম শিক্ষা দফতর। বিষয়টি নিয়ে কড়া অবস্থান বোঝাতে এ দিন বিভিন্ন সময়ে এই নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকও করা হয়। তার পরে জঙ্গলমহলের এই জেলার স্কুলগুলিতে তৎপরতাও শুরু হয়েছে।
বিনপুর ১ চক্রের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানছেন, ‘‘আমাদের বিদ্যালয়ে পাখাগুলিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি রয়েছে। ওই ছবি সাদা কাগজ দিয়ে ঢেকে ফেলতে হবে বলে দফতর জানিয়েছে।’’ অনেক স্কুলে আবার বিশুদ্ধ পানীয় জলের যন্ত্রে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর নাম রয়েছে। সেগুলিতেও সাদা কাগজ সাঁটানোর নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর। ঝাড়গ্রাম জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শক্তিভূষণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্বাচন বিধি জারি হওয়ার পরে স্কুলগুলিতে যেন কোনও রাজনৈতিক পতাকা, ফেস্টুন, ব্যানার না থাকে। এটা স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে শিক্ষকদের।’’ কেন এমন নির্দেশ? ঝাড়গ্রাম জেলা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, স্কুল চত্বরের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি বেশি হয়ে থাকে। ফলে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ব্যানার ও ফেস্টুন থাকেই। সেটা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত।
শনিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল আগরওয়াল। তিনিও আদর্শ আচরণবিধি মানার কথা মনে করিয়ে দেন। বলেন, ‘‘সরকারি ভবনে কোনও রাজনৈতিক বার্তা থাকবে না। কোনও বেসরকারি ভবনেও ‘নো অবজেকশন’ শংসাপত্র ছাড়া রাজনৈতিক কোনও কিছু লাগানো যাবে না।’’
এ দিন বিকেলেই ঝাড়গ্রাম জেলাশাসকের দফতর চত্বরে থাকা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রচারমূলক ব্যানার খুলে ফেলা হয়েছে। ব্যাঙ্কে লেনদেনের
ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে বলেছেন জেলাশাসক। জানিয়েছেন, ৫০ হাজারের বেশি টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুললে ‘কিউআর কোড’ লাগানো রশিদ সঙ্গে রাখতে হবে। ৫০ হাজারের বেশি টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিতে গেলেও সঙ্গে প্রমাণপত্র রাখতে হবে।
ঝাড়গ্রাম জেলায় একটিই লোকসভা আসন। সেখানে ভোট ২৫ মে। ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলেন, ‘‘এই নিয়ম কতটা মানা হবে, সেটাই এখন দেখার। নিয়ম না মানলে নির্বাচনী আধিকারিকের দ্বারস্থ হব।’’ জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি প্রসূন ষড়ঙ্গী বলেন, ‘‘নির্বাচন বিধি জারি হয়েছে। তা মেনে চলা উচিত।’’