—প্রতীকী ছবি।
শ্রীনগর-বারামুলা কেন্দ্রের পরে রেকর্ড ভোট পড়ল জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ-রাজৌরি কেন্দ্রেও। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ওই কেন্দ্রে ৫৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। ১৯৮৪ সালের পরে এই প্রথম এত বেশি ভোট এই কেন্দ্রে। তখন ৭০.১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। পুঞ্চ ও রাজৌরি এই কেন্দ্রের অন্তর্গত ছিল না। ২০২২ সালের সীমা পুনর্বিন্যাসের পরে ওই দুই এলাকা নবগঠিত কেন্দ্রের অন্তর্গত হয়েছে। আজ নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, কাশ্মীরে ভোটের হার সন্তোষজনক। তাই খুব দ্রুত জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট করাতে চায় তারা।
কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, রাজৌরি সংরক্ষিত ও পুঞ্চ হাভেলি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটের হার ছিল সবচেয়ে বেশি। ওই দুই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে যথাক্রমে ৬৭.০৯ শতাংশ ও ৬৪.১৯ শতাংশ। এর ঠিক পরেই রয়েছে মেন্ধর ও বুধল (সংরক্ষিত) কেন্দ্র। ওই দুই কেন্দ্রে ৬৪.৬৯ শতাংশ ও ৬৪.৯১ শতাংশ। অনন্তনাগ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৫৩ শতাংশ।
উপত্যকার রাজনৈতিক আবহাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে অনন্তনাগ কেন্দ্রে ভোটদানের হার। ১৯৮৪ সালেই সবচেয়ে বেশি ভোটদান দেখেছিল এই কেন্দ্রে। সে সময়ে ভোটদানের পক্ষে জোর সওয়াল করেছিল উপত্যকার নাগরিক সমাজ। কিন্তু ১৯৮৯ সালে উপত্যকায় জঙ্গি সন্ত্রাস ও প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিবেশের ফলে সেই হার নেমে আসে ৫.১ শতাংশে। আবার ১৯৯৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০.২ শতাংশে। ১৯৯৮-তে তা কমে আবার ২৮.২ শতাংশে দাঁড়ায়। তার পরের নির্বাচনগুলিতে আরও কমে যায় ভোটদানের হার। ১৯৯৯ সালে তা দাঁড়িয়েছিল ১৪.৩ শতাংশে। ২০০৪ সালে ভোট পড়েছিল ১৪.৭ শতাংশ।
২০০৯ সালে তা কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭.১ শতাংশে। ২০১৪ সালে ভোট পড়েছিল ২৮.৮ শতাংশ। কিন্তু ২০১৯ সালে ভোটদানের হার কমে দাঁড়ায় ৯.৭ শতাংশে। উপত্যকার রাজনীতিকদের একাংশের মতে, চলতি লোকসভা ভোটে বিশেষ মর্যাদা লোপের বিরুদ্ধে রায় দিচ্ছেন উপত্যকাবাসী। তাই ভোটের হার এত বেশি। আত্মবিশ্বাসী পিডিপি প্রার্থী মেহবুবা মুফতি, ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রার্থী মিয়াঁ আলতাফ ও আপনি পার্টির জাফর মানারও। উপত্যকায় প্রার্থী দেয়নি বিজেপি। আপনি পার্টির মতো দলকে সমর্থন করে তারা।
ভোটদানের হারে খুশি নির্বাচন কমিশনও। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের বক্তব্য, ‘‘আমি খুবই খুশি। তরুণ প্রজন্মের অনেক সদস্য, অনেক মহিলা ভোট দিয়েছেন। গণতন্ত্রের শিকড় শক্ত হচ্ছে। মানুষ অংশগ্রহণ করছেন।’’ রাজীবের বক্তব্য, ‘‘কাশ্মীরবাসীর নির্বাচিত সরকার পাওয়ার অধিকার আছে। আমরা খুব দ্রুত সেই প্রক্রিয়া শুরু করব। ভোটদানের হারে আমরা উৎসাহ পেয়েছি।’’ মার্চে লোকসভা ভোটের ঘোষণা করার সময়ে রাজীব জানান, উপত্যকায় একই সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের ব্যবস্থা করা নিরাপত্তা ও পরিকাঠামোগত কারণে সম্ভব নয়। যদি বিধানসভা ভোটের আয়োজন করা হয় তবে বিশেষ মর্যাদা লোপ ও জম্মু-কাশ্মীর ভেঙে দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি হওয়ার পরে প্রথম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সরকার নির্বাচনের জন্য ভোট দেবেন কাশ্মীরবাসী।