অধীর চৌধুরী। — ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রচারের সুযোগ করে দিতেই সাত দফায় ভোট করানো হচ্ছে বলে কংগ্রেস অভিযোগ তুলল। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বের থেকে ভিন্ন অবস্থান নিল জাতীয় কংগ্রেস। বরং তৃণমূলের সুরেই পশ্চিমবঙ্গে সাত দফায় ভোট কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আজ কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ দিল্লিতে বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে কেন সাত দফায় ভোট হচ্ছে, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।’’
ভোট ঘোষণার আগেই পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে রাজ্যে একাধিক দফায় নির্বাচন করানো দরকার বলে দাবি করেছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, বেশি দফায় ভোট হলে সন্ত্রাস রোখা যাবে। অনেক বেশি মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারবেন। রাজ্যে সাত দফা ভোট ঘোষণাকে তিনি স্বাগতও জানিয়েছেন। কিন্তু আজ দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ একাধিক বার বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে কেন সাত দফায় ভোট করানো হচ্ছে, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মতো রাজ্যেও প্রধানমন্ত্রীকে প্রচারের সুযোগ করে দিতে এত দফায় ভোট করানো হচ্ছে।”
আরও এক ধাপ এগিয়ে কংগ্রেস আজ নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। শনিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশন লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরেই আদর্শ আচরণবিধি বা ‘মডেল কোড অব কনডাক্ট’ বলবৎ হয়েছে। কিন্তু তার পরেও মোদী সরকার ‘বিকশিত ভারত’ কর্মসূচি এবং গত ১০ বছরের কাজকর্ম নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ-এ মেসেজ পাঠিয়ে প্রচার চলছে। মানুষের কাছে গত ১০ বছরে মোদী সরকারের কাজ নিয়ে মতামত জানতে চাওয়া হচ্ছে। সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লেখা চিঠিও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্র অভিযোগ তুলেছেন, তিনি নিজে এই মেসেজ পেয়েছেন। জয়রাম বলেন, ‘‘আসলে দু’টো কোড অব কনডাক্ট রয়েছে। একটা বাকি সকলের জন্য মডেল কোড অব কনডাক্ট, অন্যটা মোদীর কোড অব কনডাক্ট।’’
নির্বাচন কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জয়রাম বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা। যার কাজ নিরপেক্ষ ভোট করানো। কিন্তু গত দশ মাস ধরে ইন্ডিয়া জোটের নেতারা ভিভিপ্যাট নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাইছেন। এখনও সময়ই মেলেনি।’’ কংগ্রেসের অভিযোগ, বহু দিন ধরেই ইভিএম-এ ভোটগণনার পাশাপাশি সমস্ত ভিভিপ্যাট গোণার জন্যও দাবি করে আসছে ‘ইন্ডিয়া’-র দলগুলি। কিন্তু এ বিষয়ে কমিশন বিরোধীদের সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন না।