গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মীকে খুনের ঘটনায় কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? রাজ্যের কাছে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট (এটিআর) চেয়ে পাঠালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বুধবার রাতে নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ার মনসাবাজার এলাকায় দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন স্থানীয় বিজেপি নেতা সঞ্জয় আড়ির মা রথিবালা আড়ি। সঞ্জয় নন্দীগ্রামে বিজেপির তফসিলি মোর্চার সম্পাদক। দুষ্কৃতী হামলায় তিনিও জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। দলীয় সূত্রে খবর, রথিবালাও বিজেপির কর্মী ছিলেন।
ভোটের আগে নন্দীগ্রামে এই খুনের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে খোঁজখবর শুরু করেন রাজ্যপাল। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রাজ্য প্রশাসন কী পদক্ষেপ করেছে, তা জানিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজভবন।
যদিও রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, গোটা দেশের সঙ্গে এই রাজ্যেও লোকসভা নির্বাচন চলছে। ভোট না মেটা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসন এখনও পর্যন্ত কী পদক্ষেপ করেছে, তা বলতে পারবে কমিশনই, নবান্ন বা রাজ্য প্রশাসন নয়।
অন্য দিকে, খুনের ঘটনায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সোনাচূড়ায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে, গোটা দিন জুড়ে অবরোধ-বিক্ষোভ চলে।
তৃণমূল অবশ্য দাবি করেছে, এই ঘটনায় তারা জড়িত নয়। স্থানীয় নেতা শেখ সুফিয়ানের দাবি, বিজেপিতে নব্য এবং আদির মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। সেই লড়াইয়েরই বলি হয়েছেন রথিবালা। ঘটনার দায় শুভেন্দুর উপর চাপিয়েছেন সুফিয়ান। তাঁর দাবি, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী জানেন যে, নন্দীগ্রামে ডেফিসিট খাব, তাই একটা শেষ পেরেক মারতে হবে। যে মনসাবাজারে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে তৃণমূলের একটি ঝান্ডাও নেই। তবে আমাদের কিছু সমর্থক ওখানে থাকেন। ওরা (বিজেপি) রাত ১২টার পর গিয়ে আমাদের লোকেদের বাড়ি ভাঙচুর করে, মারধর করে। তা নিয়েই আদি এবং নব্য বিজেপির মধ্যে গন্ডগোল, মারামারি, ফাটাফাটি হয়। এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কোনও মৃত্যু সমর্থন করি না। প্রশাসনকে বলব, এর বিহিত করা হোক।’’
ঘটনার খবর পেয়েই দুপুরে নন্দীগ্রামে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। শুভেন্দু নন্দীগ্রামেরই বিজেপি বিধায়ক। নীলবাড়ির লড়াইয়ে মমতাকে হারিয়েছিলেন তিনি। দলীয় কর্মীর খুনে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, যাঁরা খুন করেছেন, পুলিশ তাঁদের সঙ্গে বৈঠকও করেছে! তাঁর কথায়, ‘‘খুনিরা থানায় এসেছিল। যারা খুন করেছে, মাকে খুন করেছে। রথিবালা আড়ি সঞ্জয় আড়ির মা নন, তিনি আমার মা। খুনিদের সঙ্গে এখনই মিটিং করেছেন। আমি জানতে চাই, খুনির সঙ্গে এখনই মিটিং করেছেন কেন? মজা দেখাব আইসিকে!’’