গিরীশ চন্দ্র মুর্মু। ছবি: সংগৃহীত।
নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের অনুগত হিসাবে পরিচিত প্রাক্তন আমলা গিরীশ চন্দ্র মুর্মু কি ওড়িশার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন? বিজেপি সূত্রে খবর, ১৯৮৫ ব্যাচের গুজরাত ক্যাডারের এই বিতর্কিত আমলার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে দিল্লির একটি প্রভাবশালী মহল থেকে। আরএসএস-এরও সায় আছে তাঁর নামে। অবসরের পরে মুর্মু বর্তমানে দেশের কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বৈঠকে বসছে ওড়িশায় বিজেপির পরিষদীয় দল। তার আগে রাজ্য নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করতে পারেন। সেই নাম পরিষদীয় দলের বৈঠকে পাশ করানো হতে পারে। বিজেপি সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তা হবে শুক্রবার সকালে। ময়ূরভঞ্জের বাসিন্দা গিরীশ মুর্মু ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসাবে বুধবার যাদের নাম শোনা গিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছেন সদ্য প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, জুয়েল ওরাম এবং বিজেপির কেন্দ্রীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্র।
নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি ছিলেন গিরীশ। কিন্তু গুজরাত দাঙ্গা এবং পরবর্তী কালে ইশরাত জহানকে পুলিশের সাজানো সংঘর্ষে খুনের ঘটনা চাপা দেওয়ার কাজে মুর্মুর হাত ছিল হলে অভিযোগ। একটি পত্রিকা ইশরাত খুনের ঘটনা নিয়ে পুলিশ প্রধানের সঙ্গে মুর্মুর কথোপকথন প্রকাশ করে দেওয়ার পরে সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। গুজরাত পুলিশের এক শীর্ষ অফিসার সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করেছিলেন, দাঙ্গার তদন্তকারী নানাবতী কমিশনে সাক্ষ্য দেওয়ার আগে প্রত্যক্ষদর্শীদের কী কী বলতে হবে এবং কী বলা চলবে না, তা শিখিয়ে পড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল মুর্মুর উপরে।
অমিত শাহের নামে দায়ের হওয়া নানা মামলা খারিজের ক্ষেত্রেও মুর্মুর হাত ছিল বলে অভিযোগ। তাঁর সঙ্গে কাজ করা এক অফিসারের কথায় আইনকানুন ও তার ফাঁকফোকরগুলি নিয়ে গিরীশ মুর্মুর অগাধ জ্ঞান। মোদী ও অমিতের প্রতি তাঁর প্রশ্নহীন আনুগত্য। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি দিল্লিতে বারে বারে নানা গুরুদায়িত্ব পেয়েছেন। সত্যপাল মালিক জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া পরে অমিত শাহ মুর্মুকে সেই পদে বসান। তার পরে তিনি সিএজি-র মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। এখন তাঁকে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানোর প্রস্তাব কার কাছ থেকে এসেছে, তা জানা না গেলেও অনেকের ধারণা কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চতম মহলই তাঁর নাম উত্থাপন করে থাকতে পারে। এ দিন দুপুরে রাজ্যপাল রঘুবর দাসের কাছে গিয়ে ইস্তফা দেন নবীন পট্টনায়ক।