সৌমেন রায়কে ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনি। —ফাইল চিত্র।
কালিয়াগঞ্জে এসে সংবর্ধনা যেমন পেলেন বিধায়ক সৌমেন রায়, তেমন দলের কর্মী-সমর্থকদের তরফে উঠল ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনিও। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে, বুধবারই প্রথম সৌমেনকে কালিয়াগঞ্জে দেখা গেল বলে দাবি। যদিও বিক্ষোভের মুখে পড়ার কথা অস্বীকার করেছেন সৌমেন।
এ দিন হেমতাবাদ বিধানসভার অন্তর্গত মহারাজায় রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কার্তিকচন্দ্র পালের সমর্থনে আয়োজিত সভায় যোগ দেন সৌমেন। পরে, ডাকবাংলো রোড সংলগ্ন বিজেপির কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার নির্বাচনী কার্যালয়ে আসেন। সেখানে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তবে সৌমেন তাঁর বক্তব্য শেষ করা মাত্র ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান দিতে শুরু করেন উপস্থিত বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। দাবি, এর পরেই দ্রুত এলাকা ছাড়েন সৌমেন। যদিও তাঁর দাবি, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে জেলা বিজেপি সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, ‘‘সৌমেনের দলবদলে কিছু কর্মী-সমর্থকের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। নিজেদের মধ্যে বসে তা মিটিয়ে ফেলা হবে।’’
গত বিধানসভায় বিজেপির টিকিটে জিতে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হন ফালাকাটার বাসিন্দা সৌমেন রায়। মাস তিনেকের মধ্যেই তৃণমূলে যোগ দেন। লোকসভা ভোট ঘোষণার কয়েক দিন আগে, সৌমেন ফের বিজেপিতে ফিরে যান। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। দলের জেলা নেতারা দাবি করেছিলেন, সৌমেন কোথায় আছেন, তা তাঁরাও জানেন না।
এ দিন বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে সৌমেন দাবি করেন, করোনার সময় মানুষের পাশে দাঁড়াতে ও রাস্তাঘাটের বেহাল দশা দূর করতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, তৃণমূল সরকারে থেকে কালিয়াগঞ্জ ব্লকে পথশ্রী প্রকল্পে ৮০টি রাস্তা তৈরি করেছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘চাকরি চুরি, খাদ্য চুরি, কয়লা-গরু পাচার এবং নারী নির্যাতনের বিরোধিতা করতেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিয়ে যে পাপ করেছি, বিজেপিতে এসে তার প্রায়শ্চিত্ত করছি।’’ এত দিন কোথায় ছিলেন? সৌমেন জানান, বিজেপিতে যোগ দিয়ে দলীয় কাজে কলকাতায় ছিলেন এবং ফালাকাটার বাড়িতেও কিছু দিন ছিলেন। তিনি আরও জানান, কোচবিহারে বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে প্রচার সেরে এ দিন উত্তর দিনাজপুরে ফিরেছেন তিনি। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে সৌমেন বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতা ও দুষ্কৃতীরা যে ফোন নম্বর জানত, সে ফোন বন্ধ করে রেখেছিলাম।’’
তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান শচীন সিংহ রায় বলেন, ‘‘সৌমেনকে মানতে না পারায় বিজেপি কর্মীরা ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান দিয়েছেন। জনবিক্ষোভ হয়েছে কালিয়াগঞ্জে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকার যে উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছে, বিজেপিতে গিয়েও তা স্বীকার করতে বাধ্য হন সৌমেন।’’
এ দিনের ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি বিজেপি প্রার্থী কার্তিকচন্দ্র পাল।