Lok Sabha Election 2024

পরীক্ষার দিনে প্রশ্ন কমন পেলেন পদ্মের অভিজিৎ? দিনভর ছুটে, ধর্নায় বসার পরে শোনালেন ‘পাস্ট টেন্স’

শনিবার ভোটের দিন হলদিয়াতেই বেশি সময় দিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানেই শুনলেন ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। কোথাও কোথাও তাঁকে ‘চোর’ বলেও ডেকেছে তৃণমূল। তবে মাথা ঠান্ডাই রইল প্রাক্তন বিচারপতির।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২৪ ২০:৪০
Share:

অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

প্রথম ‘বড় পরীক্ষা’ কেমন দিলেন ‘নতুন স্কুলে ভর্তি হওয়া’ প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়? ভোটের সকাল থেকে সন্ধ্যা— দেখে মনে হল উপভোগ করেছেন বেশ! সকাল থেকে তাঁকে ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি শুনতে হয়েছে তমলুক আসনের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে। তবে কখনও মেজাজ হারাননি। এক বারই শুধু ‘হাড়গোড় ভাঙা’র কথা বলেছেন।

Advertisement

সকালের প্রথম দিকে তিনি ছিলেন হলদিয়া বিধানসভা এলাকায়। বুথ পরিদর্শন করছিলেন। সেখানেই কয়েকটি জায়গায় অভিজিৎকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের সমর্থকেরা। কোথাও তাঁকে লক্ষ্য করে ‘চোর-চোর’ স্লোগান ওঠে। তবে অভিজিৎকে বেশি শুনতে হয় ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। অভিজিৎ সেই বিক্ষোভের মুখে প্রথম দিকে সংযত থাকলেও শেষের দিকে হঠাৎ মেজাজ হারান। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘বিক্ষোভ দেখালে হাড়গোড় ভাঙা হবে।’’

সকাল সকালই নিজের লোকসভা এলাকা পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়েন তিনি। সকাল ৭টা নাগাদ হলদিয়ার একটি বুথের বাইরে অভিজিৎকে দেখে ‘চোর-চোর’ স্লোগান ওঠে। পরে বেলা ১১টা নাগাদ হলদিয়ার অন্য একটি বুথের সামনে এসে হাজির হয় অভিজিতের গাড়ি। সেখানেও অভিজিৎকে দেখা মাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়। অভিজিৎকে কিছুটা বিরক্ত মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় বুথের সামনে। প্রশ্ন করলে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘স্লোগান দিচ্ছে তো আমি কী করব? এখানে ছাপ্পা দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ পেয়ে এসেছি। কুইক রেসপন্স টিমকে খবর দিয়েছি। তাদের আসার জন্য অপেক্ষা করছি।’’

Advertisement

জায়গায় জায়গায় ‘গো ব্যাক’ স্লোগান শুনতে কেমন লাগল? ভোটগ্রহণ পর্ব মেটার পরে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে অভিজিৎ বলেন, ‘‘যাঁরা বলছিলেন, তাঁরা বিভ্রান্ত। আসল চোরকে চেনেন না।’’ এর পরেই তিনি দাবি করেন, যাঁরা স্লোগান দিচ্ছিলেন, তাঁরা ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি দিচ্ছিলেন শেখানো লব্জ হিসাবে, অর্থ জানেন না। অভিজিৎ বলেন, ‘‘ওদের যদি প্রশ্ন করতাম, বলো তো ‘গো’-এর পাস্ট টেন্স কী, কেউ বলতে পারত না। ওরা গো ব্যাকের মানেই জানে না। লব্জটা মুখস্থ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

এ দিন কি তাঁর নিজের ‘পাস্ট’-ও মনে পড়ছিল? মাস দুয়েক আগেও হাই কোর্টে এজলাসে তিনিই ছিলেন শেষ কথা। মুখের উপরে কারও কিছু বলার ছিল না। কিন্তু ‘চোর- চোর’ স্লোগানও শুনলেন হাই কোর্ট ছেড়ে রাজনীতির স্কুলে ভর্তি হওয়া অভিজিৎ।

হলদিয়া সফরের পরে মহিষাদলে বিজেপি অফিসে যান অভিজিৎ। সেখানেই সারেন মধ্যাহ্নভোজ। পরে রওনা দেন ময়নার উদ্দেশে। এই সময়েই খবর পান, বিজেপি কর্মী বাবুলাল মণ্ডল হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডলকে নিয়ে চলে যান হাসপাতালে।

ময়নার বিজেপি বিধায়ক অশোক ডিন্ডার আপ্তসহায়ক গৌতম গুরুর বাড়িতে পুলিশি তল্লাশি চলছে খবর পেয়েই গাড়ি ঘুরিয়ে নেন ময়নার দিকে। গৌতমের স্ত্রীর দাবি, ভোট দেওয়ার পর থেকে আর খোঁজ নেই স্বামীর। বেলার দিকে পুলিশ গৌতমের বাড়িতে যায়। সেই খবর পেয়েই গৌতমের বাড়িতে যান অভিজিৎ। তিনি পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশের থেকে সার্চ ওয়ারেন্ট দেখতে চান তিনি। এর পর পুলিশি জুলুমের অভিযোগে গৌতমের বাড়িতেই ধর্নায় বসেন অভিজিৎ।

সকালের দিকে ভোট শুরুর আগেই হলদিয়ার দেভোগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে তিন জন এজেন্ট নিখোঁজ বলে অভিযোগ করেন অভিজিৎ। এর পর নিজেই এক এজেন্টকে বুথে বসান। সেখানেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকায় অসন্তুোষ প্রকাশ করেন তিনি। নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মীদের অকারণে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। দিনের শেষে পুলিশের বিরুদ্ধে অনেক ক্ষোভ উগরে দেন অভিজিৎ। তাঁর দাবি, কমিশনের কুইক রেসপন্স টিমকে কাজ করতে দেয়নি রাজ্য পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement